শিরোনাম
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানালো গণসংহতি আন্দোলন
নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে হামলাকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে আখ্যা দিয়ে এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব পরিদর্শন করেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দরা।
এসময় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের জেলা শাখার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী ফারহানা মানিক মুনা, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রধান অঞ্জন দাস।
জেলা শাখার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। এই সংগঠনে হামলা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। ০৫ আগস্টের পর থেকে একটি রাজনৈতিক দল যেভাবে হাট-ঘাট, মাঠ-বাজার, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন সেক্টর দখল করছে, তারই ধারাবাহিকতায় ঐ হামলাকারীরা হয়তো ভেবেছিলো নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবও দখল করবে। তারা হয়তো জানেই না, প্রেস ক্লাব কোনো দখলের জায়গা না।
গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রধান অঞ্জন দাস বলেন, সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় প্রেসক্লাব আছে, এদের মাঝে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের আলাদা একটি মর্যাদা আছে। নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব যে গঠনতন্ত্রের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে, নেতা নির্বাচিত হয়, সদস্য নির্বাচিত হয় এর বাইরে যাওয়ার কারো কোনো সুযোগ নাই। অবশ্যই গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই সকল কাজ পরিচালিত হবে। অন্যায়ভাবে প্রেস ক্লাব দখলের চেষ্টা চলবে না। আমরা সবসময় প্রেস ক্লাবের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী ফারহানা মানিক মুনা বলেন, শুধু নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবই নয়, যে কোনো সংগঠন তার নিজস্ব গঠনতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই চলবে। এখানে অযাচিত কোনো হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। একইসাথে, ঐ প্রতিষ্ঠানে যাতে এমন গণতান্ত্রিক পদ্ধতি চালু থাকে, যাতে করে গঠনতন্ত্র বা নিয়মনীতির বিষয়ে আলোচনার-সমালোচনা উভয়ের সুযোগ থাকে। কিন্তু জোরপূর্বকভাবে হামলার যেই ঘটনাগুলো ঘটছে, সেটাকে আমরা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড হিসেবে চিহ্নিত করি।
একইসাথে, সন্ত্রাসী হামলায় আহত প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদসহ অসুস্থ সাংবাদিকদের প্রতি সমবেদনা জানান তাঁরা।
প্রেস ক্লাব পরিদর্শন, আহত সাংবাদিকদের খোঁজ-খবর এবং প্রেস ক্লাবের পাশে থাকার ঘোষণা দেয়ায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব সভাপতি আরিফ আলম দিপু ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনে জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়ক আলমগীর হোসেন আলম, মহানগরীর সমন্বয়ক নিয়ামুল হোসেন বিপ্লব, নির্বাহী সমন্বয়ক পপি রানী সরকার প্রমুখ।
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সদস্য ও সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, যুগ্ম সম্পাদক আহসান সাদিক শাওন, কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান জুয়েল, কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদ, মাহফুজুর রহমান, আব্দুস সালাম, আফজাল হোসেন পন্টি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আশরাফ, সদস্য নাহিদ আজাদ, রফিকুল ইসলাম রফিক, হাসান উল রাকিব প্রমুখ।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর একটার দিকে ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। হামলায় প্রেস ক্লাবে সাবেক সাধারন সম্পাদক ও আমার দেশ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার সহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় হামলার নেতৃত্বদানকারী রনি নামে এক জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ হামলার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির একাংশের ইন্ধন রয়েছে বলে জানা গেছে। এ হামলার ঘটনায় ১৪জনকে আসামী করে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের পক্ষে ক্লাবের ম্যানেজার মোঃ মাসুম বিল্লাহ নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। #