নারায়ণগঞ্জ  রবিবার | ১৫ই জুন, ২০২৫ | ১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বর্ষাকাল | ১৮ই জিলহজ, ১৪৪৬

শিরোনাম
  |   বাবা দিবসে পৃথিবীর সব বাবাদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আহমেদ বাবলু    |   ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক শফিকুল    |   ইউপি সদস্য সোহেল মেম্বার সহযোগীসহ র‍্যাবের হাতে আটক   |   শহরের বিদ্যমান সমস্যা সংকট সমাধানে কাজ করতে চাই – মাসুদুজ্জামান মাসুদ   |   ইটভাটার এক শ্রমিককে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ   |   ৪৫ বছর চাকরী শেষে মসজিদের ঈমামকে রাজকীয় বিদায়   |   আই.ই.টি স্কুলের ২০০২ ব্যাচের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত   |   আওয়ামীলীগের ব্যাবসায়ী, রাজনৈতিক নতুন পরিচয়ে ফিরে আসছে – এনপিসি   |   চারারগোপে যৌথবাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্র মাদক সহ ২ জন আটক   |   বোল পাল্টে আজমীর ওসমানের গেটিস হ্যান্ডকাপ মামুন ফের বেপরোয়া   |   রূপগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা আটক, ছাড়িয়ে নিতে হামলায় ব্যাবসায়ী গুলিবিদ্ধ   |   আড়াইহাজারে আইনশৃংখলা উন্নয়নে প্রশাসন সাংবাদিক মতবিনিমিয় সভা   |   শাহ সিমেন্টের ট্রাক থেকে চুরি সন্দেহে অটোগাড়ী সহ ২ যুবক আটক   |   হেলপার দিয়ে গাড়ী চালানোর  সময় সন্তানের জনক নিহত গ্রেপ্তার-১   |   পরিবেশ আদালত ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন সংশোধন জরুরি   |   স্বৈরাচার পতন হলেও দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কার্যকর হয়নি – দুদু   |   শিশু ধর্ষণের আসামী বাচ্চু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১১   |   শহীদ জিয়ার শাহাদাৎ বার্ষিকতে থানা মৎস্যজীবী দলের কর্মসূচী পালন   |   ডিএনডি জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পরিষ্কার, উচ্ছেদ অভিযানে সেনাবাহিনী   |   টানবাজারে যৌথ বাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্র, মাদক উদ্ধার আটক ২
 প্রচ্ছদ   জাতীয়   পরিবেশ আদালত ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন সংশোধন জরুরি
পরিবেশ আদালত ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন সংশোধন জরুরি
  জাতীয় || নারায়ণগঞ্জেরখবর.কম
প্রকাশিত: বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫

নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ দেশে ১৭ কোটি মানুষের জন্য মাত্র দুটি পরিবেশ আদালত। পরিবেশ আদালতে নাগরিক সরাসরি মামলা করতে পারে না। পরিবেশ আদালত ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন সংশোধন না করা হলে দেশের পরিবেশ রক্ষা সম্ভব হবে না। আইন ও আদালত আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে সামাজিক, রাজনৈতিক, ভৌগলিক এবং মানুষের রীতিনীত ঐতিহ্য বিষয়ক গবেষণা বা এ সংক্রান্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে।

পরিবেশ সংরক্ষন আইনে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক জরিমানা আদায়ের ক্ষমতা প্রদান, পরিবেশ রক্ষায় ফোর্স গঠন, পরিবেশ আদালত আইনে নাগরিকদের সরাসারি মামলা করার ক্ষমতা প্রদান করা জরুরি। বুধবার ৪ জুন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), সেন্টার ফর ল এন্ড পলিসি এফেয়ার্স, পাবলিক হেলথ লইয়ার্স নেটওয়ার্ক, বারসিক, বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), ওপেন সিসেমি ফাউন্ডেশন, আর্থ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত সভায় বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন। পবার সম্পাদক জনাব মেসবাহ সুমনের সঞ্চালনায় সভায় মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর ল এন্ড পলিসি এফেয়ার্স এর সম্পাদক এডভোকেট জনাব সৈয়দ মাহবুবুল আলম।

বিশিষ্ট পরিবেশবিদ জনাব আবু নাসের খান বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিবেশ আদালত আইন সংশোধন আজ একটি অতি জরুরি বিষয়। পরিবেশ আইন সংশোধনের পাশাপাশি টেকসই পরিবেশ উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের উপর মন্ত্রণালয় এবং রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা জরুরি। পরিবেশবিদ ড. লেলিন বলেন, বর্তমানে পরিবেশ দূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষ রোগাক্রান্ত এবং মৃত্যুবরণ করছে। এমতবস্থায় পরিবেশ আদালত আইনে সরাসরি মামলা দায়েরের অধিকার না থাকা, নাগরিক অধিকার হরণের সামিল। বাংলাদেশ ইনিসটিটিউট অব প্লানার্স এর সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, আইনগুলো দূর্বলভাবে তৈরি করা হয়, যাতে নাগরিক প্রতিকার না পায়। আইনগুলো প্রণয়নের সাথে জনগন জড়িত না থাকার কারণে তাদের স্বার্থের সাথে সংঘাত থাকে। যারা পরিবেশ সংরক্ষণে কাজ করে তাদের উন্নয়ন বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু পরিবশদূষণ, খাল ও নদী দখলদারদের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
বারসিকের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পরিবেশ দূষণের ফলে আমাদের খাদ্য দূষণ হচ্ছে। খাদ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ব্যারিষ্টার নিশাত মাহমুদ বলেন, পরিবেশ আদালতে এক্সপার্ট নিয়োগ দেয়ার বিধান থাকতে হবে, পাশাপাশি পরিবেশ আদালতের বিচারকদের পরিবেশ বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষন দিতে হবে। এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের স্বার্থে দ্বন্ধ সংক্রান্ত কোড অব কন্ডাক্ট তৈরি করতে হবে। এডভোকেট মমতাজ বলেন, পরিবেশ আইন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আইন বিষয়ে সচেতনতার অভাবেও আইনভঙ্গ হয়ে থাকে। পরিবেশ দূষণের আংশঙ্কার প্রেক্ষিতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করতে হবে। নাগরিক অধিকার ফোরামের সভাপতি তৈয়ব আলী বলেন, পরিবেশ রক্ষায় নাগরিকদের দায়িত্বশীল করতে আইনের প্রয়োগ জোরদার করতে হবে। এডভোকেট সুলতান মাহম্মুদ বান্না বলেন, পরিবেশ রক্ষায় বিষয়টি পরিকল্পনায় থাকতে হবে এবং উন্নয়ন করার ক্ষেত্রে পরিবেশ সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। পরিবেশ সাংবাদিক এহছানুল হক জসিম বলেন, পরিবেশ আইনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলে পরিবেশ আদালত আইনে মামলা করা যায় না। বাংলাদেশে প্রায় ২১০০ রীট হয়েছে, কিন্তু তার অর্ধেক সংখ্যক মামলা হয়েছে পরিবেশ আদালতে। এতেই প্রমানিত হয় পরিবেশ আদালত আইনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
সভায় এডভোকেট উম্মে হাবিবা বলেন, পরিবেশ আইনে ঘটনাস্থলে জরিমানা আরোপোর ক্ষমতা প্রদান করা জরুরি। পরিবেশকর্মী নাসির আহমেদ চৌধুরী নাগরিকদের মাঝে আইনের সচেতনা বৃদ্ধি জোরদার করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে পদক্ষেপ গ্রহনের আহবান জানান। নগর পরিকল্পনাবিদ ফাহমিদা ইসলাম বলেন, পরিবেশ আইনের লঙ্গন একটি অপরাধ এই বিষয়টিতে প্রচারণা জোরদার করতে হবে। জনস্বাস্থ্য বিশেষঞ্জ সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে জনগনকে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করা এবং মতামত নেয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। বেলার এডভোকেট হাসানুল বান্না বলেন, পরিবেশ সংরক্ষনের ক্ষেত্রে বিশেষায়িত পুলিশদের, যেমন টুরিস্ট পুলিশদের ক্ষমতা প্রদান করতে হবে। মাঠ রক্ষা আন্দোলনের কর্মী সৈয়দা রত্না বলেন, যারা আইন রক্ষার দায়িত্বে থাকেন তারা যদি ভঙ্গকারী হন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা থাকা জরুরি। পরিবেশকর্মী পারভীন ইসলাম বলেন, সরকারের বিভিন্ন সংস্থাগুলোর মাঝে সমন্বয় নাই আর সমন্বয় না থাকার জন্য আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন হয় না। চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্যবিদ আ ফ ম সারোয়ার বলেন, আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে মানুষের আচরণের পরিবর্তন করতে হবে। উন্নয়নকর্মী আমিনুল ইসলাম বকুল বলেন গুলশান বনানীতে অবকাঠামো নির্মানে যে নিয়ম মানা হয় তা অন্য এলাকায় মানা হয় না, এর অর্থ হচ্ছে আইনের প্রয়োগে বৈষম্য রয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক খন্দকার মোহাম্মদ তাহাজ্জত আলী বলেন, স্পেশাল ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে সারা দেশে ১২০০ মামলা হয়েছে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন শক্তিশালী করার লক্ষ্যে অধিদপ্তর কাজ করা করছে। তিনি আরও বলেন পরিবেশ আইনে তাদের জবাবদিহিতার বিধান আছে এবং তারা সম্প্রতি কলসেন্টার সেবা চালু করেছেন যার নাম্বার ৩৩৩ এবং ৩৩৪, এই নাম্বারে নাগরিকগণ অভিযোগ জানাতে পারে। পরিবেশকর্মী হাফিজুর রহমান ময়না মাঠ পার্কগুলো সংরক্ষনের বিষয়সমূহ পরিবেশ আইনে যুক্ত করার সুপারিশ করেন।
সভায় পরিবেশ আইন প্রয়োগে পরিবেশ ফোর্স ইউনিট স্থাপন করতে আনসার বাহিনীর সদস্যদের ফোর্স হিসেবে সম্পৃক্ত করা, অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযোগকারীর অভিযোগ নিষ্পত্তি বাধ্যতামূলক করা, সচেতনতা, গবেষণা, প্রকল্প বাস্তবায়ন ইত্যাদি কাজ কমিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরকে একটি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থায় পরিণত করা, পরিবেশ আদালতে মামলা দায়ের বিধান স্পষ্ট করা, ক্ষতিপূরণ ও শাস্তির পাশাপাশি তদন্ত চলাকালে বা অবস্থার প্রেক্ষিতে একাউন্ট স্থগিত, ইউিটিলিটি সার্ভিস বন্ধ করার ক্ষমতা প্রদান, পরিবেশদূষণকারীদের লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিলের ব্যবস্থা রাখা, পরিবেশদূষণের আশংকায় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের বিধান, সরকারী প্রকল্প বা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতিপূরণ ও জবাবদিহীতার আওতায় আনার ব্যবস্থা, পরিবেশ আদালত আইন সংশোধনে করে নাগরিকদের সরাসরি মামলা করার সুযোগ দেয়ায় সুপারিশ করা হয়।#

গাছ লাগান পরিবেশ বাচাঁন, যোগাযোগ ভাই ভাই নার্সারী মোবাইল – ০১৭১২২৫৬৫৯১

ফেইসবুকে আমরা

এ সম্পর্কিত আরো খবর...

error: Content is protected !!
error: Content is protected !!