নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জের ২ লাখের অধিক শিশুকে টাইফয়েড টিকা দিবে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। আগামী ১২ অক্টোবর থেকে সিটি এলাকার তিনটি স্থায়ী কেন্দ্রে ১০ কার্যদিবস চলবে এ কার্যক্রম।

বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানান নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেডিকেল অফিসার নাফিয়া ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সচিব নূর কুতুবুল আলম, ইপিআই কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন, মুর্শিদা আক্তার, হাফিজ উদ্দিন খাঁন। এসময় নূর কুতুবুল আলম বলেন, টিকাদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। কারণ এত বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে সুশৃঙ্খলভাবে টিকা দেয়ার নজির অন্য কোন দেশে নেই। তিনি আরও বলেন, টিকা নিয়ে অনেক সময় ভুল ধারণা ও গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকা রাখতে আহবান জানান তিনি।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়-দেশে প্রতিবছর প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়, যার মধ্যে প্রায় ৮,০০০ জনের মৃত্যু ঘটে।

আক্রান্তদের অধিকাংশই ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু। গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ (GBD) ২০২১ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৪,৭৭,৫১৮ জন টাইফয়েড রোগী ছিল, অর্থাৎ প্রতি ১ লাখ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ২৯০ জন টাইফয়েডে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে ৬১ শতাংশই ১৫ বছরের নিচের শিশু।সম্মেলনে জানানো হয়, সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এবং বৈশ্বিকভাবে ঔষধ-প্রতিরোধী টাইফয়েডের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। বিশ্বে টাইফয়েডে আক্রান্তের হার বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়,
দেশে প্রতিবছর প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়, তার মাঝে প্রায় ৮,০০০ জন মৃত্যুবরণ করে যার অধিকাংশই ১৫ বছরের কম বয়সি শিশু। গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ (GBD) ২০২১ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৪,৭৭,৫১৮ জন টাইফয়েড রোগী ছিলো বলে ধারণা করা হয় অর্থাৎ প্রতি ১,০০,০০০ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ২৯০ জন রোগী টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত ছিল, যার মধ্যে ৬১ শতাংশ ছিল ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে আঞ্চলিকভাবে এবং বৈশ্বিকভাবে ঔষধ-প্রতিরোধী টাইফয়েডে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্বে টাইফয়েডে আক্রান্তের হার বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার আগামী ১২ অক্টোবর ২০২৫ থেকে সারাদেশব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উক্ত টিকাদান ক্যাম্পেইনে প্লে/প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেনী পর্যন্ত ১২ অক্টোবর থেকে পরবর্তী ১০ কার্যদিবস নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের ২ নভেম্বর থেকে পরবর্তী ৮ কার্যদিবস সিটি কর্পোরেশনের তিনটি জোনের স্থায়ী কেন্দ্রে টিকাদান ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে। সেই লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে তিন অঞ্চলের যথাক্রমে সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চল (জোন-১) স্কুল সংখ্যা-২৭৮ টি এবং স্কুলের লক্ষ্যে মাত্রা ৬৭,৯৩৩ জন, নারায়ণগঞ্জ অঞ্চল (জোন-২) স্কুল সংখ্যা-১২৫ টি এবং ৪১,৯২৬ জন, কদম রসূল অঞ্চল (জোন-৩) স্কুল সংখ্যা-১৫৪ টি এবং স্কুলের লক্ষ্যে মাত্রা-৩৯,৬৭৩ জন। কমিউনিটি পর্যায়ে তিন অঞ্চলের যথাক্রমে সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চল (জোন-১) স্থায়ী/অস্থায়ী কমিউনিটি কেন্দ্রের সংখ্যা-৫৮ টি এবং কমিউনিটির লক্ষ্যে মাত্রা-২৭,৬৭৩ জন, নারায়ণগঞ্জ অঞ্চল (জোন-২) স্থায়ী/অস্থায়ী কমিউনিটি কেন্দ্রের সংখ্যা-৩৮ টি এবং কমিউনিটির লক্ষ্যে মাত্রা- ২২,০৭৭ জন, কদম রসূল অঞ্চল (জোন-৩) কমিউনিটি কেন্দ্রের সংখ্যা-৩৩ টি এবং স্থায়ী/অস্থায়ী কমিউনিটির লক্ষ্যে মাত্রা-১৪,৯৩৫ জন। সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চল (জোন-১) স্কুল ও কমিউনিটি সহ ৯৫,৬০৬ জন, নারায়ণগঞ্জ অঞ্চল (জোন-২) স্কুল ও কমিউনিটি সহ ৬৪,০০৩ জন এবং কদম রসূল অঞ্চল (জোন-৩) স্কুল ও কমিউনিটি সহ ৫৪,৬০৮ জন। তিন অঞ্চলে সর্বমোট ২,১৪,২১৭ জনকে টিকা দেয়া হবে।
ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী
ঘনবসতিপূর্ণ জনগোষ্ঠী, বস্তি বা নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী।
এন্ডেমিক এলাকায় ভ্রমণকারী।
আউটব্রেক পরিস্থিতির মধ্যে থাকা জনগোষ্ঠী।
নিম্ন স্বাক্ষরতার হার যেখানে নিরাপদ পানি এবং স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশনের অভাব রয়েছে।
অনিরাপদ উপায়ে এবং স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যারা খাবার প্রস্তত বা পরিবেশন করেন।
শিশুরা টাইফয়েড জ্বরে অস্বাভাবিকভাবে আক্রান্ত হয় এবং অনেকদিন ধরেই এটা জানা যে ৫ বছর থেকে ৭১৫ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এর সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটে।
#
