টেকনাফ থেকে বিকল্প পথে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচলের দাবি
কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে বিকল্প পথে জাহাজ চলাচলের দাবি জানিয়েছেন সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কোয়াব) ও ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক)।বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে কক্সবাজার শহরে অভিজাত হোটেলের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘গত ২৮ সেপ্টেম্বর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় নাফ নদীতে নাব্যতা হ্রাসের কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে এ নৌপথে জাহাজ চলাচলের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করে আসছে জাহাজ মালিকরা। পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানোর মাধ্যমে সরকারের রাজস্বখাতে অবদান রেখে আসছে। কক্সবাজারে প্রতিবছর ২০-২৫ লাখ পর্যটক ভ্রমণে আসেন, তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ পর্যটকের চাহিদা সেন্টমার্টিন ভ্রমণের, আমরা পরিবেশ-প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষা করে পর্যটকদের সেন্টমার্টিন ভ্রমণে উৎসাহিত করে আসছি। এতে করে কয়েকশত মানুষের বিনিয়োগে টেকনাফ, উখিয়া, ও সেন্টমার্টিনে গড়ে উঠেছে উন্নত মানের হোটেল মোটেল রিসোর্ট ও অসংখ্য রেস্তোরাঁ। এ কারণে সৃষ্টি হয়েছে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান।’সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ‘বিগত বছরগুলোতে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত পর্যটন মৌসুমে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে ১০টি জাহাজ চলাচল করে আসছে। কিন্তু গত ২৮ সেপ্টেম্বর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে যা হতাশাজনক।’সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ‘ইতোপূর্বে বিগত বছরগুলোতে নাব্যতা শংকট থাকা সত্ত্বেও আমরা জাহাজ পরিচালনা করে এসেছি। তাছাড়া নদীর কয়েকটি অংশে ডুবুচর জেগেছে কয়েক বছর ধরে। মাঝে-মধ্যে উক্ত ডুবুচরে পর্যটক বাহী জাহাজ আটকা পরার খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হয়েছে। সম্ভবত এ কারণে সরকার আপাতত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে এবার জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখে। প্রয়োজনে পর্যটক পারাপারে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিনের জাহাজ চলাচল করা হলেও তা পর্যটন সেবা আশানুরূপ নয়।’এতে আরও বলা হয়, ‘পর্যটকদের কথা বিবেচনা করে পর্যটন শিল্পকে ধ্বংসের কবল থেকে রক্ষা করতে বিকল্প পথে টেকনাফ হতে সেন্টমার্টিন পর্যটক পারাপারের চিন্তা করা হচ্ছে। যেহেতু নাফ নদীতে নাব্যতা শঙ্কটের কথা বলা হয়েছে, সেহেতু নাফ নদী থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ রেখে বিকল্প হিসেবে টেকনাফের সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন সৈকত থেকে জাহাজ চলাচল চালু করা সম্ভব। তাতে করে পর্যটকের ঝুঁকি তেমন থাকে না ও সাবরাং পয়েন্ট থেকে পর্যটক নিয়ে জাহাজগুলো সরাসরি সেন্টমার্টিন জেটি ঘাটে পৌঁছানো অধিকতর সহজ। এতে করে ভাড়াও বাড়বে না, সময়ও কম লাগবে।’এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা, আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সি-ক্রুজ অপারেটরস্ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর।এ সময় অন্যান্যদের বক্তব্য রাখেন সি-ক্রুজ অপারেটরস্ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়ার) সভাপতি তোফাইল আহমদ, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) এর সভাপতি আনোয়ার কামাল প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মুনিবুর রহমান টিটু, ইফতেখার আহমদ, মো. রাসেল, নুর মোহাম্মদ, নাছির উদ্দিন, তৌহিদুল ইসলাম, শাহ আলমসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।