অপুর পথেই কি হাঁটছেন বুবলী?
শোবিজ তারকাদের নিয়ে সব সময়ই মানুষের আগ্রহ বেশি থাকে। সিনেমার পাশাপাশি তাদের ব্যক্তিজীবন নিয়ে বিভিন্ন সময় মুখরোচক খবর শোনা যায়। মুখরোচক সব খবরই গুঞ্জন নয়। বিনোদন সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত কাজ করতে গিয়ে তারকাদের হাঁড়ির খবর রাখেন। কিন্তু অনেক খবর জেনেও তারা প্রকাশ্যে আনেন না। এর অন্যতম কারণ চলচ্চিত্রের ক্ষতি, ব্যক্তিগত সর্ম্পক বা প্রমাণ না-থাকা। অর্থাৎ তিনি ঘটনাটি জানেন কিন্তু এর স্বপক্ষে তার কাছে কোনো প্রমাণ নেই।
তবে তারকাদের ব্যক্তিজীবন নিয়ে যেসব খবর প্রকাশ্যে আসে, এক সময় সেগুলো সত্য বলে প্রমাণিত হয়। অতীতে এমন ঘটনা অনেকবারই ঘটেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য সেই ঘটনা যাকে নিয়ে তিনি কখনও মুখ খোলেন না। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দেন। এর জ্বলন্ত প্রমাণ শাকিব খান-অপু বিশ্বাসের প্রেম-বিয়ের খবর। দীর্ঘ ৮-১০ বছর খবরটি গুঞ্জন বা গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই খবর ২০১৭ সালে সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। সেদিক থেকে বলা যায় ‘যা রটে তা কিছু হলেও বটে’ কথাটি আবারো প্রমাণিত হয়।
এবার কি অপুর পথেই হাঁটছেন শবনম বুবলী? এমন কথা এখন এফডিসির বাতাসে ভাসছে। শুধু তাই নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে কথা হচ্ছে বিস্তর। অর্থাৎ গত দুদিন হলো বিষয়টি টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। যদিও বরাবরের মতোই বুবলী এ বিষয়ে মুখ খোলেননি।
বুবলী যদি বিয়ে করে থাকেন এবং সন্তান জন্ম দিয়ে থাকেন তাতে দোষের কিছু নেই। এ নিয়ে দীর্ঘদিন লুকোছাপার কোনো কারণও দেখছেন না অনেকে। মাতৃত্ব নারীর গৌরব। সেই গৌরবের কথা কাঁদতে কাঁদতে বলা ভালো কোনো লক্ষণ নয়। বিয়ে বা সন্তান যদি বৈধ পন্থায় হয়ে থাকে তাহলে তা প্রকাশ্যে আনাই ভালো। না হলে এ নিয়ে যত সময় যাবে গুজবের ডালপালা ছড়াবে। ফলে এতে বুবলীর লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে। অনেকের মনে থাকার কথা। ২০১৭ সালের ১৮ মার্চ, বিকেল ৪টা ৫৬ মিনিট। নিজের ফেইসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন বুবলী। ছবিতে শাকিব-বুবলী ছাড়া আরও তিনজনকে দেখা গেছে। ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘ফ্যামিলি টাইম’। ছবিটি দেখে তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন অপু বিশ্বাস। শুরু হয় অপু-বুবলী বাকযুদ্ধ। তখনো অধরা শাকিব-অপু সম্পর্ক। কিন্তু অনেকেই তখন বুঝতে পেরেছিলেন কেন অপু বিশ্বাস ‘শাকিবের সঙ্গে বুবলীর ফ্যামিলি টাইম’ মেনে নিতে পারেননি। বিষয়টি আরো খোলাসা হয় ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল। এদিন ছেলে আব্রাম খান জয়কে নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে লাইভে এসে অপু বিশ্বাস জানান ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল শাকিবের গুলশানের বাড়িতে দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে হয়। শাকিব-অপুর ছেলে জয়। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতার একটি ক্লিনিকে জন্ম হয় জয়ের। স্বাভাবিক কারণে নিজের স্বামীর সঙ্গে কেউ ছবি প্রকাশ করে ‘ফ্যামিলি টাইম’ লিখলে স্ত্রী প্রতিবাদ করবেন এটাই স্বাভাবিক।
আজ ২০২২ সালে এসে মনে হচ্ছে সেদিনের সেই ‘ফ্যামিলি টাইম’ অনেক ডালপালা ছড়িয়েছে। অন্তত তাদের নিয়ে গুঞ্জন তাই বলে। এই গুঞ্জনের আরো কারণ আছে। একটার পর একটা সিনেমায় অভিনয় করে যাচ্ছিলেন শাকিব-বুবলী। অন্যদিকে অনেক নাটকীয়তা শেষে বিচ্ছেদ হয় শাকিব-অপুর। বাস্তব জীবনের পাশাপাশি লাইট-ক্যামেরার দুনিয়া থেকেও হারিয়ে যায় এ জুটি। এদিকে প্রেম বা বিয়ে নিয়ে আজ পর্যন্ত সরাসরি কিছু বলেননি বুবলী। ২০১৭ সালেই বিষয়টি বুবলী পরিষ্কার করতে পারতেন। তাতে তার সামাজিক সম্মান কমতো না। আর ক্যারিয়ার? ক্যারিয়ার কখনও চিরস্থায়ী হয় না। তাছাড়া এখন পাশের দেশের অনেক নায়িকা মা হয়ে দিব্যি ক্যামেরার সামনে কোমর দুলিয়ে যাচ্ছেন। আলিয়া ভাটের মতো নায়িকা গর্বের সঙ্গে বলছেন মা হওয়ার কথা। কারিনা কাপুর চাইলেই বিষয়টি লুকোতে পারতেন; ঐশ্বরিয়া রাই, সোনম কাপুর বিষয়টি লুকোননি। তারা বিয়ের কথাটাও সবাইকে জানিয়েছেন। সুতরাং বুবলী যখন বলছেন তিনি শালীনতা, নিয়ম মেনেই সব করেছেন তখন বিষয়টি নিয়ে সমাজের আপত্তি থাকার কথা নয়। অথচ আপত্তি তার নিজের। অপু বিশ্বাসের ক্ষেত্রেও শুরুতে এই আপত্তি ছিল। যখন দেখেছেন আর পারছে না তখন বিষয়টি সামনে এনেছেন, প্রকাশ্যে ফেলেছেন চোখের জল।
শাকিব খানের সন্তান আব্রাম খান জয়ের জন্মদিনে নিজের বেবি বাম্প প্রকাশ্যে এনে বুবলী কি বোঝাতে চেয়েছেন এটাও অনেকের প্রশ্ন। এমন দিনটিই কেন বেছে নিলেন তিনি? শাকিব খানের সন্তান রয়েছে। স্বাভাবিক কারণে নিজের সন্তানের জন্মদিন তিনি পালন করবেন, ফেসবুকে পোস্ট দেবেন এটাই স্বাভাবিক। এমন দিনে বিষয়টি প্রকাশ্যে এনে বুবলী নিজেই অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছেন।
অপু বিশ্বাসের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে অবাক হবেন না অনেকেই। অন্তত ফেইসবুক সে কথারই সাক্ষ্য দিচ্ছে। এখন সময়ই বলে দেবে কোনটি গুঞ্জন, কোনটি গুঞ্জন নয়- সত্য।