শিরোনাম
আত্মনির্ভরশীল ব্যাক্তিত্বের প্রতীক ঝালমুড়ি বিক্রেতা নানা ভাই | মর্মান্তিক মৃত্যু, স্ত্রী আহত
হাসান উল রাকিব – নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ একজন স্বনির্ভরশীল ব্যক্তিত্বের প্রতীক ঝলমুড়ি বিক্রেতা নানা ভাই হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত মোজাম্মেল হেসেনের। বৃৃৃৃদ্ধ বয়সে শহরে কঠোর পরিশ্রম করে টিকে থাকলেও, জীবনের শেষ বয়সে নিজের গ্রামের বাড়িতে স্থায়ী ভাবে বসবাসের ইচ্ছে করেছিল সে। কিন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় ঘাতক ট্রাক প্রান কেরে নিয়ে সেই স্বপ্ন পূরন হতে দেয়নি ।
বরং সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়ে পাবনা জেলার শহরের ভাঙ্গাকালী বাড়ি নিজ গ্রামে কবরের মাটির ঘরই যেন তার স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেল। (ইন্না-লিল্লাহ ওইন্নালিল্লাহে রাজিউন) একই সাথে সড়ক দুর্ঘটনার গুরুতর আহত তার স্ত্রী ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ পাক্কা রোড এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়ায় বসবাস করতেন মোজাম্মেল দম্পতি । দেওভোগ বড় জামে মসজিদের পাশে ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসারের ভরনপোষণ চালাতেন। শেখ রাসেল পার্কে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের কাছে তার ঝালমুড়ি খুবই প্রিয় ছিল। নব্বই বছরেও মোজাম্মে হেসেন (নানা ভাই) তার ছেলেদের উপর্জনের দিকে না তাকিয়ে নিজেই ঝালমুড়ি বিক্রি করে স্বনির্ভরশীল ভাবে নিজের সংসার চালাতেন। বৃদ্ধ বয়সে বার্ধক্যজনির নানা সমস্য নিয়েও দিনরাত পরিশ্রম করতেন।
বার্ধক্যের ভারে কাজ করার সময় তার দু’হাত রিতীমত কাঁপতো। তবুও হাল ছাড়েনি সে । এই বসয়ে সে নিজেই প্রতিদিন বাজার করতেন। তার বৃদ্ধ স্ত্রী ঝালমুড়ির পসরা তৈরী করে দিতেন। সে নিজ হাতে কাগজের ঠোঙ্গা বানাতেন। একটি ছোট্ট ভ্যানগাড়িতে করে তার সুস্বাধু ঝালমুড়ি বিক্রি করতো। তার ঝালমুড়ির স্বাদ ও সুনামের কারনে অল্প সময়েই সে এ শহরের মানুষের কাছে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। তাকে নিয়ে ভিডিও কনটেন্ট, ফেসবুকে স্টাটাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পরিচিত পান ঝালমুড়ি নানা ভাই হিসেবে।
ভালই চলছিল তার স্ত্রীকে নিয়ে ছোট সংসার। গত এক মাস যাবত তার ইচ্ছার কথা প্রকাশ করে তিনি আর ঝালমুড়ি বিক্রি করে শহরে থাকতে চাইছিলনা। অনেকের সাথে প্রকাশ করে শহর ছেড়ে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে জীবনের বাকি সময়টা গ্রামেই কাটিয়ে দিবে। কথা অনুযায়ী গত ৩১ সেপ্টেম্বর বিকেলে একটি কভার্ট ভ্যানে করে ঘরের আসবাবপত্র ও নিজের স্ত্রীকে নিয়ে গ্রমের বাড়ি উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথে রাত ৩ টায় মানিকগঞ্জে মহাসড়কে একটি ট্রাকের সাঘে সংঘর্যে ঘটনাস্থলেই নিহত হন বৃদ্ধ মেজাম্মেল হোসেন ( নানা ভাই।)
একই দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী ও ছেলে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাগালে চিকিৎসাধীন আছে।
নানা ভাইয়ের ছোট ছেলে, মোঃ মিঠুন কান্না জড়িত কন্ঠে জানিয়েছেন, সবসময় কঠোর পরিশ্রম করতো তার বাবা । দীর্ঘদিন শহরে বসবাস করে শহর থেকে তার মন উঠে গেছে। গ্রামেই বাকি জীবনটা কাটাতে চেয়েছিল। তা আর হলো না। বাবাকে সববময় দেখেছি খুব পরিশ্রম করতে। সে কখোনা কারে উপর নির্ভর করতো না। এমনকি নিজের ভরনপোষণ খরচটাও নিজেই উপার্জন করতেন।
এদিকে তার মা আহত অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা কড়ছেন। চিকিৎসা খরচ চালাতে তারা হিমসিম খাচ্ছে। প্রয়েজনে নানা ভাইয়ের ছোট ছেলে মিঠুনের মুঠোফোন নাম্বার- ০১৯৩৪৪৯৭৪৬৯।
মোজাম্মেল হোসেন মৃত্যুকালে চার ছেলে এক মেয়ে আত্মীয় স্বজন সহ অসংখ্য গুনগ্রাহি রেখে গেছেন। তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে সকলের কাছে দোয়া কামনা করেছেন তার পরিবার #