নারায়ণগঞ্জে বাল্কহেড শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
বন্দর প্রতিবেদকঃ মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীর কথিত বালুমহাল ইজারাদার কর্তৃক নৌ চলাচলের বাধা প্রদান, শ্রমিকদের মারধর করে চাঁদাবাজি করা ও নির্যাতন বন্ধে পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে নৌ পুলিশ প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বন্দরের ১৯নং ওয়ার্ডের মদনগঞ্জের শান্তিনগরস্থ শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের স্থানীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে নৌ পুলিশের উর্ধ্বতনরা ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে মালিক ও শ্রমিকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেয়।
ওই বৈঠকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর নৌ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কলাগাছিয়া নৌ পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ, মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া নৌ থানার ইনচার্জসহ বাল্কহেড মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীর কথিত বালুমহাল ইজারাদার কর্তৃক নৌ চলাচলের বাধা প্রদান, শ্রমিকদের মারধর করে চাঁদাবাজি করা ও নির্যাতন বন্ধ এবং নৌ পুলিশের কিছু সদস্যদের ব্যক্তিস্বার্থে বাল্কহেড শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা, মাসোহারা নেয়া ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৯নং ওয়ার্ডের মদনগঞ্জের শান্তিরচরে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে কর্মবিরতি পালনের ডাক দেয় শ্রমিকরা। ওই সময় বাল্কহেড শ্রমিকরা অবিলম্বে নৌ শ্রমিকদের নিরাপত্তা দেয়া না হলে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বালুমহাল ইজারার নামে আফসু চেয়ারম্যানের গ্রুপ, রাসেলের গ্রুপ, আল ইসলামের গ্রুপসহ একাধিক গ্রুপ নৌ শ্রমিকদের উপর ভয়াবহ নির্যাতন চালাচ্ছে। দ্রুত শ্রমিকদের উপর নির্যাতন বন্ধ না হলে কর্মবিরতিসহ কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার জানান, ওই কর্মবিরতি পালনের ঘোষণার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের বন্দর, কলাগাছিয়া, মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর ও গজারিয়া নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাবৃন্দ মদনগঞ্জের শান্তিরচরে আসেন। এসময় বাল্কহেড মালিক ও শ্রমিকরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে নৌ পুলিশের পুলিশ সুপারও অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন। বৈঠকে শ্রমিকরা তাদের নির্যাতনের বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং নৌ পুলিশের উর্ধ্বতনদের কাছে প্রতিকার দাবি করেন। পরে নৌ পুলিশের উর্ধ্বতনরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি শ্রমিকদের নিরাপত্তায় পুলিশের টহল আরো বাড়ানোর আশ^াস দেন। এসময় নৌ পুলিশের উর্ধ্বতনরা বালুমহালের ইজারাদারের সঙ্গেও মুঠোফোনে কথা বলেন। বালুমহালের ইজারাদারও ভবিষ্যতে শ্রমিকদের উপরে কোন ধরনের নির্যাতন হবেনা বলে আশ্বাস দেন। পরে নৌ পুলিশের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় শ্রমিকরা।#