সিটি কর্পোরেশন মাঠ রক্ষা করছে, খেলার পরিবেশ তৈরীতে আন্দোলন জরুরি–ইমামুল হাসান স্বপন
কলাম…..ইমামুল হাসান স্বপন
নারায়ণগঞ্জের খবর ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জ থেকেই জাতীয় তারকা ফুটবলার তৈরী হয়েছে। এক সময় নারায়ণগঞ্জে অনেক মাঠ ছিল, জাতীয় পর্যায়ে অনেক তারাকা খেলোয়াড় নারায়ণগঞ্জ থেকে দেশ বিদেশের মাঠ কাপিয়েছেন। মাঠের অভাবে মাঝে খেলোয়াড় তৈরীতে সংকট সৃস্টি হয়েছে। আমরা মনে করি বঙ্গসাথী ক্লাব যে টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে। সমাজে এ রমক আয়োজন আরো প্রয়োজন।
সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাঃ আইভি এ মাঠগুলো রক্ষা করেছেন। এখন মাঠ রক্ষা ও খেলোয়াড় তৈরী করাকে সাসাজিক আন্দোলনে পরিণত করা প্রয়োজন। এভাবে টুর্নামেন্ট চলতে থাকলে, যুব সমাজ মাদক ও মাফিয়াদের থাবা থেকে রক্ষা পাবে। জাতীয় পর্যায়ে আরো নতুন খেলোয়াড় জন্ম নিবে। সমাজ হবে উপকৃত।একবার ভাবুন তো, আপনার পাশের বাড়ির বা আপনার পরিরের কেউ কঠিন মাদকাসক্ত, এতে কি যন্ত্রণা ও কস্ট হয়। বিপরিতে যদি একজন খেলোয়াড় থাকেন পরিবারে বা প্রতিবেশে তাহলে কেমন হয়। কতো আনন্দ আর উচ্ছাস। আমরা সকলে নিশ্চয় পরেরটাই চাইবো। শুধু চাইলেই তো হবে না, পেতে হলে কিছু করতে হয়।
মাঠ থাকলে খেলোয়াড় আসবেইঃ
ডিএস এস ক্লাবের মাঠ গিলে খাওয়ার অপচেস্টা করা হচ্ছিল।বিষয়টি জানতে পেরে এই ঐতিহ্যবাহী মাঠটি রক্ষায় এগিয়ে আসেন মেয়র। উনরনয়ণ পরবর্তীতে চোখ ফেরানো যায় না, সৌন্দর্যের কারণে।
নদীর পূর্বপাড় বন্দর , সিদ্ধিরগঞ্জেও বেশ কিছু মাঠ উদ্ধার ও রক্ষা করে উন্নয়ণ করা হয়েছে।
যেখানে ভর করেছিল রাজ্যের হতাশা। হারিয়ে যেতে বসেছিল অনেক গুলো স্বপ্ন, সেখানে আবার প্রাণের স্পন্দন উঠেছে। এসেছে নতুন করে গড়ে উঠার দিশা। নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ এলাকার ঐতিহ্যবাহী ডি এস এস ক্লাব মাঠটি সিটি করপোরেশন উদ্ধার করে উন্নয়ণ কর্মকান্ড পরিচালনা করার পর এখন চেনাই যায় না।দর্শকদের বসার জন্য গ্যালারি, সকাল সন্ধ্যায় হাটা ও শারীরিক কসরতের জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। বৃক্ষরোপন করার কারণে সৌন্দর্য বেড়েছে। শুধু ডি এস এস মাঠ নয় আলাউদ্দিন খাঁন স্টেডিয়াম, মদনগঞ্জ ওয়েল ফেয়ার, মাহমুদনগর স্টেডিয়াম, গকুলদাসের বাগ, গোদনাইলখেলার মাঠ,সিরাজদৌলা ক্লাব মাঠ মিনি স্টেডিয়াম, সোনাকান্দা স্টেডিয়াম গুলোও অনুরূপ ১৩ টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধী। তিনটির কাজ শেষ।মাঠ গুলোর সুফল পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। মাঠের কারনে অনেক সম্ভাবনা ও স্বপ্ন ফিরে এসেছে।আর স্বপ্ন ফিরে পেয়ে মানুষ সিটি মেয়রের বন্দনা শুরু করেছেন।
এলাকাবাসীরা জানান, দেওভোগের ঐতিহ্যবাহী ডিএসএস ক্লাব মাঠটি বহুবার দখলের পায়তারা করেছে স্থানীয় বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী।আমরা হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভির হস্তক্ষেপের কারণে মাঠটি দখলমুক্ত হয়। মাঠটিকে মিনি স্টেডিয়াম করারও দ্রুত উদ্যোগ নেন সিটি মেয়র। পরে ২০১৯ সালের ২৫ জুন মঙ্গলবার মাঠটিকে মিনি স্টেডিয়াম গড়ার কাজ শুরু করে সিটি কর্পোরেশন। মাঠটির সংস্কার কাজের ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। মাঠ উদ্ধোধনের পর মানুষের বাধ ভাঙ্গা আনন্দ দেখা গেছে।
সুদূর জাপান প্রবাসী গাজী হেলাল তাঁর ফেসবুকে ডিএসএস ক্লাব মাঠের বর্তমান উন্নয়ণের ছবি আপলোড করে লিখেন,”আসসালামু আলাইকুম, নারায়নগঞ্জের দেওভোগ নাগবাড়ী ডি এস এস ক্লাবের মাঠ :
শৈশবের স্মৃতি জর্জরিত এই মাঠ , ৭০/৮০ দশকে বাংলাদেশে ফুটবলের জনপ্রিয়তা যখন তুঙ্গে তখন এই মাঠে বড় ভাই গাজী ভাই সহ প্রিয় ভাইজানরা খেলতেন , পরবর্তীতে দেওভোগ মুক্ত সবুজ সংগের আমরাও ( ছোট বেলার স্কাউট ক্লাব ) ফুটবল প্রেকটিস করতাম , বর্ষায় পানিতে ডুবে করুন অবস্খার পর পানি শুকালে সবাই মিলে পরিস্কার করা , এখনও চোখ বন্ধ করলে সকল স্মৃতি চুখের সামনে ভেসে উঠে , মরহুম আলী আহাম্মদ চুনকা সাহেব ওনার প্রিয়জনদের নিয়ে প্রতি বৎসর এখানে ক্রিকেট ও কাবাডি খেলার আয়োজন করতেন , স্পোর্টস প্রতিযোগিতা সহ নানান বিনোদনের উৎস ছিল এই মাঠ , দেশ থেকে ফুটবল বিলুপ্ত হওয়ার পর এই মাঠটি হয়ে পরেছিল অবহেলিত , মাঠকে পুনরায় নতুন সাজে সাজিয়ে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহিত হওয়ার অনুপ্রেরনা দান ও সুস্থ সুন্দর সমাজ তৈরীর লক্ষ্যে যিনি এগিয়ে এলেন উনি আমাদের গর্ব ও অহংকার সম্মানিত মেয়র ডা: সেলিনা হায়াৎ আইভী আপা , আল্লাহপাক ওনাকে সুস্থতার সাথে নেক হায়াৎ ও সকল স্বপ্নের সফলতা দান করুন , আমিন। ইনশাআল্লাহ্ পুনরায় মেয়র হিসাবে আপনার জয় অনিবার্য।”
কেবল ডিএস এস মাঠ নয়। নারায়ণগঞ্জ সিটি এলাকায় এরকম অনেক গুলো মাঠ উদ্ধার করে সংস্কার ও উন্নয়ণ করছেন মেয়র সরাসরি হস্তক্ষেপ করে। জিমখানা আলাউদ্দিন খাঁন স্টেডিয়াম, মদনগঞ্জ শেখ কামাল স্টেডিয়াম,সোনাকান্দা পূর্নাঙ্গ স্টেডিয়াম, শহীদ নগরে আলী আহম্মদ চুনকা স্টেডিয়ামসহ সিদ্ধিরগঞ্জ সদর ও বন্দরে মাঠ গুলোর কারণে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এসকল এলাকাবাসী মাঠের সুফল পাচ্ছেন। অনেক কিশোর ও যুবক এখন নিয়মিত খেলাধূলা করতে পারছেন। মাঠের অভাবে যখন খেলাধূলা বিমুখ হয়ে কিশোর যুবকরা বিপথগামী হচ্ছে তখন এসকল মাঠ এই বিপথগামীতা ঠেকাতে অগ্রনী ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি জাতীয় ক্ষেত্রে আগের মতো খেলোয়াড় সৃস্টিতে অবদান রাখবে। সম্ভবত আরও চুন্নু এমেলি মুন্নার সৃস্টি হবে। হতে পারে আলাউদ্দিন খাঁনের সৃস্টি। আবার ক্রিকেটেও অনেক খেলোয়াড় উঠে আসবেন।
বন্দরের শরীফ আহমেদ জানান, এক সময় জাতীয় দলের অনেক খেলোয়াড় আমাদের এখানে আসতেন খেলতে। তখন জমজমাট লীগ খেলা হতো। আবার জমবে খেলা এই মিনি স্টেডিয়াম ও মাঠ গুলোতে।
চিত্তরঞ্জনের আলমগীর জামান বলেন, একটা সময় দাপটের সাথে জাতীয় লীগে আমাদের এলাকার খেলোয়াড়রা খেলতেন। মাঠ গুলোর কারণে জড়তা ভর করেছবলে। নতুন আঙ্গিকে মাঠ পাবো। এই মাঠরগুলো আমাতের অতীত ও ঐতিহ্যফিরিয়ে দেবে। মেয়রের উদ্যোগ সমাজের জন্য কল্যাণ জনক। তাঁর সফল্য কামনা করি।’
আমরা যতো দূর জানি এ সকল মাঠ রক্ষার কারণে মেয়রকে এক প্রকার যুদ্ধ করতে হয়েছে। তাঁর সাহস ও ধৈর্য আজকে তরুন ও যুবকরা নতুন দিনের গান গাইছেন, ডিএসএস ক্লাবে মাঠে শুক্রবার বিকেলে প্রাণের স্পন্দন শোনা গেছে। অনেক প্রবীন স্মৃতিতে ডুবে স্মরণ করতে থাকেন ফেলে আসা দিনের কথা। সবাই প্রত্যাশা করেনসো নালী দিন আবার ফিরে আসবে। আমরা আশা করছি উদ্ধার করা মাঠ গুলোতে এলাকাবাসী ও সংগঠন গুলো উদ্যোগ নিয়ে টুনার্মেন্ট, প্রতিযোগীতা প্রশিক্ষন কর্মসুচির ব্যবস্থা করবেন। এতে করে আবারো আলাউদ্দিন খাঁন, চুন্নু আমিনুল, সালাউদ্দিন, এমেলি, গাউস সহ আরও অনেকের মতো নতুন করে কেউ না কেউ বের হয়ে এসে আমাদের স্বপ্নের সারথী হবেন। মনে প্রাণে বিশ্বাস করি মাঠ যখন এসেছে খেলোয়াড়ও আসবেন।#