শিশুর অসুস্থতার কারণ হতে পারে ডায়াপার
শিশুদের জন্য ডায়াপারের ব্যবহার ক্রমশ বেড়ে চলেছে। অনেক মা-বাবাই প্রায় তিন বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানকে ডায়াপার পরিয়ে রাখেন।ডায়াপারের ব্যবহারের একাধিক সুবিধা রয়েছে। আর এই সুবিধাগুলোই মা-বাবাদের ডায়াপারের প্রতি আকৃষ্ট করছে। বেশিরভাগ অভিভাবকই মনে করেন, শিশুকে ডায়াপার পরিয়ে রাখা মানে অনেকটা নিশ্চিন্ত থাকা। বিশেষ করে, বাইরে বেরোনোর সময় কিংবা রাতে একটু নিশ্চিন্তে বিশ্রামের কারণে সন্তানকে ডায়াপার পরিয়ে রাখেন।ডায়াপার ব্যবহারের সুবিধা থাকলেও, এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। দীর্ঘ সময় এর ব্যবহারের ফলে শিশুর ত্বক ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, বেশি ডায়াপার ব্যবহারের ফলে কী কী ক্ষতি হতে পারে।অ্যালার্জি: শিশুদের ত্বক খুবই নরম ও মসৃণ হয়, তাই সামান্য অবহেলাতেই তাদের ত্বকের বিরাট ক্ষতি হতে পারে। ডায়াপার তৈরিতে সিন্থেটিক ফাইবার, রং এবং বিভিন্ন রাসায়নিক পণ্য ব্যবহার করা হয়। এসব ডায়াপার ব্যবহারে শিশুর সেনসিটিভ ত্বকের ক্ষতি হয় এবং অ্যালার্জিও হতে পারে। তাই, এমন ডায়াপার ব্যবহার করুন যা অত্যন্ত নরম এবং স্কিন-ফ্রেন্ডলি উপকরণ দিয়ে তৈরি।ব়্যাশ: শিশুদের ডায়াপার ব়্যাশ খুব সাধারণ সমস্যা। ভেজা নোংরা ডায়াপার দীর্ঘক্ষণ পরে থাকলে তাতে ব্যাকটেরিয়া বংশবৃদ্ধি করে এবং সেখান থেকেই ত্বকে ব়্যাশ, লালচে ভাব হতে পারে। শিশুকে ডায়াপার পরালে অবশ্যই নিয়মিত তা বদলানোর কাজটি মনোযোগ দিয়ে করতে হবে। যাতে মলমূত্র ত্যাগের পর তা দীর্ঘক্ষণ শিশুর গায়ে লেগে না থাকে। সংক্রমণ: ডায়াপার এমন উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়, যা সহজেই প্রস্রাব শোষণ করতে পারে। এই উপাদানই শিশুর ডায়াপারের ভেতরে বাতাস প্রবেশে বাধা দিতে পারে, ফলে ডায়াপারের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য জীবাণুর বংশবৃদ্ধি হতে পারে। ডায়াপার বেশি ব্যবহার করলে শিশুর ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই, ঘন ঘন শিশুর ডায়াপার পরিবর্তন করুন। অনেকে ঘরের ভেতরও দীর্ঘ সময় ডায়াপার পরিয়ে রাখেন। যদিও তা উচিত নয়।কমোড বসতে অস্বস্তি: বেশিরভাগ সময় বাচ্চাকে ডায়াপার পরিয়ে রাখলে তাকে টয়লেট ট্রেনিং দিতে সমস্যা হতে পারে। কারণ তারা ডায়াপারেই প্রস্রাব ও মলত্যাগ করতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। ফলে কমোডে প্রস্রাব ও মলত্যাগ করার ট্রেনিং-এ সমস্যা দেখা দেয়। তাই, ডায়াপার খুব কম ব্যবহার করাই ভালো।
সতর্কতা
নিম্নমানের ডায়াপার বাচ্চার জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। ডায়াপার বেছে নেওয়ার সময় তার শোষণক্ষমতা, আরামদায়ক এবং লিকপ্রুফ কি না, তা দেখে নিতে হবে। ডায়াপার বেশি আঁটসাঁট করে পরানো যাবে না, তাহলে শিশুরা খুব অস্বস্তিতে থাকবে।ডায়াপার বদলানোর সময় শিশুকে খুব যত্ন করে পরিষ্কার করতে হবে। এর জন্য ভেজা কাপড়, তুলার তৈরি বল অথবা বেবি ওয়াইপস ব্যবহার করে পরিষ্কার করতে হবে। তবে অতিরিক্ত সুগন্ধি বা অ্যালকোহলযুক্ত বেবি ওয়াইপস ব্যবহার করা যাবে না, ত্বকের জন্য এগুলো ক্ষতিকর। শক্ত ডায়াপার পরালে অনেক সময় শিশুর পায়ের ও কোমরের আশপাশে দাগ হয়ে যেতে পারে। তাই ঢিলেঢালা ডায়াপার পরালে শিশুরা আরাম পেতে পারে। জীবাণু যাতে ছড়াতে না পারে, সে জন্য শিশুর ডায়াপার বদলাবার পর ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে।