শিরোনাম
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের জান্নাতে পাঠিয়ে আবারো বিতর্কে ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল
সোনারগাঁও প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে শনিবার দুপুর ৩টার দিকে নেতাকর্মীরা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল সদস্যের রূহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন মোঃ মাহাবুব রহমান বাবুল। এসময় তিনি মোনাজাতে বলেন বঙ্গবন্ধুর পরিবারদের সদস্যদের যারা নিঃস্বার্থভাবে হত্যা করেছে তাদের সকল সদস্যকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন।
এসময় মোনাজাতে উপস্থিত নেতাকর্মীরা আমিন আমিন আল্লাহ নিকট সমর্পিত হোন। এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহুর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। পরে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নজরে আসলে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
মোনাজাতে উপস্থিত ছিলেন, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মোস্তাফিজ রহমান মাসুমসহ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সদস্যরা ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সকল সদস্য ও নেতাকর্মীদের গতকাল শনিবার টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারতে যান উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়া। কবর জিয়ারত শেষে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল সদস্যের রূহের মাগফেরাতের জন্য দোয়া করা হয়। দোয়া করেন বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন বাবুল। মোনাজাতে তিনি বঙ্গবন্ধুর রূহের মাগফেরাত কামনা করে বঙ্গবন্ধুর সকল খুনিদের জান্নাত নসিব করার জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেন। প্রার্থনার সময় উপস্থিত সকল নেতৃবৃন্দ আমিন বলে আল্লাহ নিকট সমর্পিত হোন। লায়ন বাবুলের সেই মোনাজাত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া মোনাজাতে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ব্যর্থিত হোন। নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন একজন অনভিজ্ঞ চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ীকে দিয়ে মোনাজাত করার কারণে একটি স্পর্শকাতর বিষয়টি টিকে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন। এটি মোটেও ঠিক হয়নি। এত বড় একটি অনুষ্ঠানে বড় বড় নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে লায়নের মতো সাধারণ মানুষকে দিয়ে মোনাজাত করা ঠিক হয়নি। যার ফলে হিতে বিপরিত হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে বারদিতে একটি মিলাদ মাহফিলে লায়ন বাবুল বলেন আমি বারদির ম্যাজিষ্ট্রেস্ট প্রধানমন্ত্রী বারদি আসতে হলে আমার পারমিশন লাগবে। সেই বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে সাবেক এক ইউপি সদস্য মামলা দায়ের করেন। এছাড়া এ বক্তব্যের জন্য লায়ন বাবুলকে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু বলেন, যারা হাইব্রিড ও অনুপ্রবেশকারী তারাই এসব কথা বলতে পারে। তার বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি করেন তিনি।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়া জানান, কি বলেছে সেটা আমি শুনি নাই। কিন্তু যদি এমন কথা বলে থাকে তাহলে এটি দুঃখজনক।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগে সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোঃ শহীদ বাদল বলেন, এর আগেও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সে কটুক্তি করায় উপজেলা আওয়ামীলীগ থেকে তাকে বহিস্কৃত করা হয়েছেন। যদি সে এমন কথা মোনাজাতে বলে থাকে তার বিরুদ্ধে দলীয় নিয়ম অনুযায়ি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, এমন ঘটনা কখনো মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। #