শিরোনাম
ত্বকী প্রতিবাদ করতে শিখিয়েছে | দুর্বৃত্ত শক্তি ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখতে চায়,যা সম্ভব না-মেয়র আইভী
নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর ২৭ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অষ্টম জাতীয় ত্বকী চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা ২২ এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আজ বিকেলে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক, নিহত ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বি’র সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, নাট্য ব্যাক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক শওকতআরা হোসেন, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মে র সদস্য সচিব কবি হালিম আজাদ ও ত্বকীকে নিয়ে রচনা লেখায় ‘ত্বকী পদক’ পাওয়া বিজয়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়োর শিক্ষার্থী শ্যামা দত্ত। অনুষ্ঠানে উপস্থিথ ছিলেন তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর মা রওনক রেহানা।
সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিচার ব্যাবস্থা স্মার্ট না হলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে না। পাতাল রেল বা সেতু দিয়ে দেশ স্মার্ট হয় না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পূর্ব শর্ত হয়েছে স্বাধীন বিচার ব্যাবস্থা । বিচার ব্যাবস্থা স্বচ্ছ ও স্বাধীন না হলে সবকিছুই অর্থহীন হয়ে পড়ে। ত্বকী ছিল অশেষ সম্ভাবনার প্রতীক। অঙ্কুরে এ সম্ভাবনাকে হত্যা করা হয়েছে। এমনি নির্মম হত্যার বিচার কেন দশ বছরেও হবে না? তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, ক্ষমতায় থাকাই সব নয়। হাশরের ময়দানে দাঁড়াতে হবে। কী জবাব দেবেন সেখানে? এমন বাংলাদেশ আমরা চাইনি। আমরা সোচ্ছার কণ্ঠে দাবি করছি ত্বকী হত্যার বিচার চাই।
সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ত্বকী হত্যার বিচার কেন হচ্ছে না, তা সারা দেশের মানুষ বুঝতে পারে। এখানে এমন প্রভাবশালী লোকজন জড়িত, রাষ্ট্রের ছত্রছায়ায় যাদের বেড়ে ওঠা। নিজেদের তারা এমনই মনে করে যে রাষ্ট্রকেই মানতে চায় না। রাষ্ট্র তাদের ভয় পায় কি না জানি না। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্য ও শান্তি ধ্বংস করার জন্য ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছে। এ দুর্বৃত্ত শক্তি নারায়ণগঞ্জের মানুষকে ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখতে চায়, যা আর কখনো সম্ভব না। ভয়ের নারায়ণগঞ্জ আজ প্রতিবাদের নারায়ণগঞ্জ হয়েছে। ত্বকী আমাদের প্রতিবাদ করতে শিখিয়েছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শিখিয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ত্বকী সহ নারায়ণগঞ্জের সকল হত্যার বিচার দাবি করেন।
রামেন্দু মজুমদার বলেন, নারায়ণগঞ্জ এখন বাংলাদেশের প্রতীক। ত্বকী প্রজ্জ্বলিত আলোর প্রতীক, সম্ভাবনার প্রতীক। ত্বকীর জন্য আমরা এখন আর শোক করবো না। ত্বকীর আলোকে উদ্যাপন করবো। ত্বকীর আলো ছড়িয়ে দেবো সবখানে।
রফিউর রাব্বি বলেন, রাষ্ট্র কতটা নিষ্ঠুর ও বর্বর হতে পারে তার উদাহরণ এই ত্বকী হত্যা ও এর পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রম। ৬২ বার ত্বকী হত্যা মামলার তারিখ ঘুরেছে তৈরী করে রাখা অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়ার জন্য। কিš‘ দেয়া হয়নি। দুর্বৃত্ত রক্ষার রাজনীতি থেকে পরিত্রাণের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, কিš‘ আমরা তা থেকে মুক্ত হতে পারিনি। দেশটাকে সকলের বানানোর জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, কিš‘ তা হয় নি। দেশের অর্থ বৃটিশরা নিয়ে যাচ্ছে বলে যুদ্ধ হয়েছিল, আমাদের টাকা পশ্চিমারা নিয়ে যাচ্ছে বলে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল কিন্ত এখন বৃটিশ বা পাকিস্তানীদের চেয়ে শতগুণ বেশী টাকা দেশীয়রা বিদেশে পাচার করছে। তিনি বলেন, এ রাষ্ট্রকে ভেতর থেকে বদলানো নাগেলে ত্বকীদের নিরাপত্তা ও বিকাশ সম্ভব নয়। অনুষ্ঠানে সারা দেশের বিজয়ী ৬০ জনকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। ছয়টি বিভাগে শ্রেষ্ঠ ছয়জনকে “ত্বকী পদক” প্রদান করা হয়। সেরা দশজননের লেখা ও আঁকা নিয়ে প্রকাশিত হয় স্মারক “ত্বকী”। #