মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা: জেলেদের নানা অভিযোগ
যথাসময়ে খাদ্য সহায়তা না পাওয়া, প্রকৃত জেলেরা কার্ডধারী হতে না পারা ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লক্ষ্মীপুরের জেলেরা।সমুদ্র ও নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া দেখাতে গিয়ে এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।এদিকে লক্ষ্মীপুর মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান ৪০ হাজার জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ৭ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত মাছ ধরায় জরি করা নিষেধাজ্ঞা সফল হলে এবার ২৭ হাজার মেট্টিকটন ইলিশ উৎপাদনে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকা অর্থাৎ লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে সরকার। তাই এ এলাকায় মা ইলিশ সংরক্ষণে সরকার সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। একই সঙ্গে ইলিশ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন ও মজুত রাখা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অভিযান বাস্তবায়নে মৎস্য বিভাগ, কোস্ট গার্ড ও নৌ পুলিশ মাঠে কাজ করছে।স্থানীয় সূত্র বলছে, ৭ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞা শুরুর পরপরই নদী থেকে তীরে ফিরে এসেছেন রামগতি, কমলনগর, সদর ও রায়পুর উপজেলার প্রায় ৬০ হাজার মৎস্যজীবী। মজু চৌধুরীর হাট ও বুঁড়ির ঘাট এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জেলেদের অনেকে জাল বুননে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। আবার কেউবা ঘুরাঘুরি করে অলস সময় পার করছেন।এসব জেলেদের দাবি, মাছ বিক্রি করে পাওয়া টাকা দিয়েই চলে তাদের সংসার। কিন্তু দুই দিন মাছ না ধরায় খাবার কিনতে পারছেন না তারা। খাদ্য সহায়তা না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। আর তাই সরকার যদি দ্রুত সহায়তা করে তাহলে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো না মৎস্যজীবীদের।এদিকে জেলে হয়েও বছরের পর বছর সরকারি তালিকাভুক্ত হতে না পারার অভিযোগও করেছেন অনেক জেলে। তাদের অভিযোগ জনপ্রতিনিধিদের স্বজনপ্রীতিতে প্রকৃত জেলেরা কার্ডধারী হতে পারেননি। এতে করে সরকারি সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে তারা। কেউবা বলছেন সরকারের নিয়ম মেনে অনিয়মের সংসারে বিপাকে পড়েছেন জেলেরা।অপর জেলে শেখ অন্তর বলেন, আমরা নদী ভাঙন এলাকার মানুষ। ভোলা থেকে এখানে এসে বসবাস করছি। লক্ষ্মীপুর এলাকায় ১০ হাজারের বেশি ভোটার আছেন। কিন্তু আমরা কোনো সাহায্য সহযোগিতা পাইনা। আমি এখানে মাছ ধরি।জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ৪০ হাজার জেলের জন্য সরকারের খাদ্য সহায়তা এসেছে। শিগগিরি প্রতিজনকে ২৫ কেজি হারে চাল দেওয়া হবে। এছাড়া তাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। জেলেদের তালিকা সংশোধনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলেরা নিয়ম মানছেন। আশা করছি এবার প্রচুর ইলিশ উৎপাদন হবে জেলায়।