বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা না হলে কারুশিল্প ফাউন্ডেশন হতো না – চারুকলার ডিন নেসার হোসেন
সুমন মিয়া,সোনারগাঁ প্রতিবেদকঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নেসার হোসেন বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের দেখা না হলে হয়তো কোন দিন লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন হতো না। শিল্পচার্য জয়নুল আবেদীন সেই ১৯৫৫ সাল থেকেই কারুশিল্প সংগ্রহশালা করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। পাকিস্তান আমলে পাকিস্তানী শাসকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্ত তারা কেউই শিল্পাচার্যকে সংগ্রহশালা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর শিল্পাচার্যের স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের ৪৯ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে সোনারগাঁয়ে ফাউন্ডেশনের লালন চত্বরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর সাথে জয়নুল আবেদীনের ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। স্বাধীন বাংলাদেশের যে সংবিধান রচিত হয়েছিল সেখানে অলংকরণ করেছিলেন জয়নুল আবেদীন। বাংলাদেশের লোকশিল্প সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য জয়নুল আবেদীনের অবদান চির স্মরনীয় হয়ে থাকবে। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই যে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনই বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের স্বপ্নদ্রষ্টা। জয়নুল আবেদীনের নিরলস পরিশ্রমে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ এক প্রজ্ঞাপন বলে এ ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু করেন।অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি ড. আমিনুর রহমান সুলতানের সভাপতিত্বে ও রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তা মোজাম্মিল হকের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত উপ পরিচালক একে আজাদ সরকার, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের কনিষ্ঠ পুত্র প্রকৌশলী ময়নুল আবেদীন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন সোনারগাঁ সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফুজ্জামান অপু।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি ড. আমিনুর রহমান সুলতান তার বক্তব্যে বলেন, আমরা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছি। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনারগাঁয়ে একটি কারুশিল্প শিল্পগ্রাম প্রতিষ্ঠা করবেন, আশা করছি চলতি বছরই তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। এছাড়া ফাউন্ডেশন চত্বরে একটি নৌকার জাদুঘর করা হবে যেখানে দেশের সকল ধরনের নৌকা সংরক্ষন করা হবে। পাশাপাশি আবহমান বাংলার কৃষিকাজে ব্যবহৃত প্রচলিত দেশীয় যন্ত্রপাতি ও ফসলের বীজ নিয়ে আলাদা সংগ্রহশালার পরিকল্পনাও রয়েছে। ¯স্থানীয় স্কুল কলেজের ছাত্রীদেরকে নকশি কাঁথা ও নকশি পাখা তৈরির প্রশিক্ষণও দেয়া হবে যাতে তারা কারুশিল্পের সাথে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করতে পারে। অনুষ্ঠানে ১৯৪৫ সালের কৃষক সম্মেলনে আবদুল মজিদ তালুকদারের গাওয়া বিখ্যাত গান পরিবেশন করেন তার পুত্র আবুল বাশার তালুকদার। এর আগে ফাউন্ডেশন চত্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শিল্পাচার্যজয়নুল আবেদীনের ভাষ্কর্যে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অতিথিদের সাথে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় এবং সোনারগাঁ সরকারী কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। #