শিরোনাম
নদী দখল দূষনমুক্ত করতে চিঠি দিয়েও সাড়া পাইনি, আমারাই কাজ করবো- মেয়র আইভী
নারায়ণগঞ্জে খবর প্রতিবেদকঃ নারায়গঞ্জে নদীতে শিল্প দূষন রোধে করনীয় শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে নদীতে শিল্প দূষন রোধ নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলোচনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
এসময় মেয়র আইভী বলেন,নদীকে বাঁচাতে নদীর পার্শ্ববর্তী জমি দখলমুক্ত করা সহ দূষন মুক্ত করা প্রয়োজন। নদী দখল দূষন মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়ে সহযোগিতা চেয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। ডীপ ড্রেন করে ময়লা পানি ইটিপি প্লান্টের মাধ্যমে বিশুদ্ধ করে নদীতে ফেলার উদ্যোগ নিয়েও কারো সাড়া না পাওয়ায় এ কার্যক্রম শুরু করতে পারিনি। আমাদের আর্থিক সমস্যা কাটলে আমরাই কাজ করবো।
মেয়র আইভী আরো বলেছেন, ‘২০০৯ সালে নারায়ণগঞ্জের চিত্তরঞ্জন পুকুর রক্ষা করার জন্য বেলার শরনাপন্ন হয়েছিলাম। তাদের মাধ্যমে রায় পেয়ে সেই পুকুরটি রক্ষা করতে পেরেছি। আমরা যারা মেয়র নির্বাচিত হয়ে এসেছি তাদের আসলে ক্ষমতা খুবই সামান্য। চাইলেও অনেক কিছু করতে পারি না।
মেয়র আইভী বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় আছে নদীর তীরবর্তী জায়গা স্থানীয় সিটি করপোরেশন বা পৌরসভাকে দিতে হবে। সেখানে সবুজায়ন, খেলার মাঠ করতে হবে। আমরা নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিলাম জায়গার জন্য। মন্ত্রণালয় বিআইডব্লিউটিএ কে নির্দেশনা দিলেও সেই জায়গা আমাদের দেয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে সেই জায়গা দখল করেছি আমরা।
তিনি আরও বলেন, ‘নদী দূষণে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কিছুটা দায়ী। কারন আমাদের যত বর্জ্য আছে তা ড্রেনের মাধ্যমে নদীতে ফেলা হয়। আমরাই সবার আগে প্রস্তাব দিয়েছি ইটিপির মাধ্যমে পানি নদীতে ফেলতে চাই। কিন্তু এর জন্য অর্থ দরকার, সেই ফান্ড কেউ দিচ্ছে না আমাদের।
এসময় সৈয়দা রেজুয়ানা হাসান বলেন, নদীতে দূষন কমাতে শিল্প বর্জ্য কমাতে ইটিপি প্লান্ট শতভাগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন, আজ এ আলোচনায় বিকেএমইএ ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মার্সের কোন প্রতিনিধি উপস্থিত হয়নি। তাহলে এ কার্যক্রম এগোবে কি করে। প্রয়োজনে তাদের আবারও চিঠি তাদের মতামত নেওয়া হবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, ‘কারখানার দূষণের বিষয়গুলো সরকার অবগত রয়েছে। কিন্তু কোন প্রক্রিয়ায় এই দূষণ রোধ করা সম্ভব এবং কিভাবে তা করতে হবে সেই বিষয়ে আমাদের সরকারকে সহযোগীতা করার পাশাপাশি ভুমিকা রাখতে হবে। আমরা আগামী নভেম্বরে পরিবেশ ও নৌ মন্ত্রীকে নারায়ণগঞ্জ এনে এই দূষণের বিষয়গুলো তাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। লোকবলের অভাব এটা কোন উল্লেখ করার মত যুক্তি নয়, দেশের মানুষকে কাজে লাগাতে পারলে লোকবলের অভাব হবে না। যেসব প্রতিষ্ঠান দূষণ করছে কিভাবে তাদের দূষণ না করে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় আসতে বাধ্য করা যায় সেই কাজটিই পরিবেশ অধিদপ্তর ও কলকারখানা অধিদপ্তরের দায়িত্ব।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, এ এল আর ডি নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রধান সহকারী কর্মকর্তা সাকিব মাহামুদ, নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোম্মদ জাকির হোসেন।
এসময় নদীতে শিল্প দূষন রোধে করনীয় বিষয়ে শিল্প, সাংস্কৃতি, সহ পরিবেশবাদি বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা বক্তব্যে বলেছেন, নদীতে শিল্পকারখানা ডাইংয়ের বর্জ্য সহ গৃহস্থালীর বর্জ্য পাল্টিক নদীতে ফেলা হচ্ছে। কোন রকম কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। বেশির ভাগ শিল্প কারখানা ডাইংয়ে ইটিপি প্লান্ট নেই। #