শিরোনাম
সেই ছাত্রীকে ফেল করালো শিক্ষক | এস এস সি পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত
নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ কথিত ‘স্পেশাল ক্লাস’ এর ফি ছয় হাজার টাকা না দেয়ায় স্কুলের টেষ্ট পরীক্ষার হল থেকে উঠিয়ে প্রায় পৌনে এক ঘন্টা দাড় করিয়ে রাখা হয়েছিলো স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী সুচনাকে। আর এ অমানবিক আচরনের অভিযোগ করা সেই ছাত্রীকে তিন সাবজেক্টে ফেল করিয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সেই ছাত্রীর পরিবার।
মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী সুচনা দাস নিতু গত ৮ নভেম্বর অভিযোগ করে কথিত ‘স্পেশাল ক্লাস’ এর ফি ছয় হাজার টাকা না দেয়ায় স্কুলের টেষ্ট পরীক্ষার হল থেকে উঠিয়ে তাকে প্রায় পৌনে এক ঘন্টা দাড় করিয়ে রাখা হয়। স্কুলের হেড মিষ্ট্রেস লায়লা আক্তার ‘বেতন দিতে পারোনা এখানে মরতে এসেছো কেনো, অন্য স্কুলে গিয়ে মরো এমন’ কথা বলেন ঐ ছাত্রীকে। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে ঐ শিক্ষিকাকে ফোন দেয়া হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন।
যেদিন নিতুর সাথে এই আচরন করা হয় সেদিন ছিলো তার এস এস সি’র টেষ্ট পরীক্ষার ভ‚গোল পরীক্ষা। তার বাবা যুবরাজ রবি দাস একটি প্রতিষ্ঠানের গার্ড। মেধাবী ছাত্রী সুচনা টিউশনি করে নিজের খরচ নিজেই চালায়। তার রোল নাম্বার তিন। স্কুলে তার কোনো মাসের বেতন বাকি নেই। পরীক্ষার ফি-ও দেয়া। তবে কথিত ‘স্পেশাল ক্লাস’ এর এর ফি সে দিতে পারেনি। স্পেশাল ক্লাস সে করতেও চায়নি। কারন এটি তার দরকার নেই। এছাড়া এটির ফি দেয়ার তার সাধ্য নেই। সে স্কুল থেকে বেতন মওকুফ চেয়েছিলো। সেটি তাকে না দিয়ে তখন বলা হয়েছিলো পুরো বেতন দিয়ে গেলে স্পেশাল ক্লাসের ফি নেয়া হবে না। সে অনুযায়ী সে স্পেশাল ক্লাস করে। কিন্তু পরীক্ষার আগে স্কুলের এসিসট্যান্ট হেড মিস্ট্রেস তার কাছে স্পেশাল ক্লাসের ফি দাবী করে। না দেয়ায় এর আগে তাকে দুই দিন ক্লাস থেকে বের করে দাড় করিয়ে রাখা হয়। ভ‚গোল পরীক্ষার দিনও তাকে প্রায় পৌনে এক ঘন্টা ক্লাস থেকে বের করে দাড় করিয়ে রাখে এই এসিসট্যান্ট হেড মিস্ট্রেস। ফলে তার ভ‚গোল পরীক্ষা খারাপ হয়। খারাপ হয় পরের দিনের পরীক্ষাও।
নিতু ও তার পরিবার বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করলে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ঐ শিক্ষিকা ও স্কুল কমিটি। নিতুর মা পারুল অভিযোগ করেন, সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করায় নিতুকে তিন সাবজেক্টে ফেল করিয়ে দেয়া হয়েছে। যাতে সে এস এস সি পরীক্ষা না দিতে পারে। ক্লাসে নিতুর রোল নাম্বার তিন। সে খারাপ ছাত্রী না। তার চাইতে বেশ খারাপ ছাত্রীরাও পরীক্ষায় পাশ করে গেছে। কিন্তু তাকে ফেল দেখানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসিসট্যান্ট হেড মিষ্ট্রেস লায়লা আক্তারকে ফোন করা হলে তিনি জানান, কাউকে আমি ফেল করিয়ে দিতে পারিনা। কারন কোন খাতা কার এটা আমি জানিনা। ছাত্রীদের খাতায় কোড দিয়ে খাতা বিচার করা হয়।
এ ব্যাপারে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তাকে ফেল করিয়ে দেয়া হয়েছে এটা কিভাবে বুঝা গেলো ? এ প্রতিবেদক এক্ষেত্রে ভ‚ক্তভোগি মেয়েটির খাতা দেখার কথা বললে তিনি বলেন, আমি খাতা দেখবো কেন ? মেয়ের অভিভাবক দেখবে। অভিভাবককে খাতা দেখানোর ব্যবস্থা করতে প্রতিবেদক বললে তিনি বলেন, সে নিয়ম অনুযায়ী দেখবে। একজন ছাত্রীকে পরীক্ষার মাঝে উঠিয়ে নিয়ে দাড় করিয়ে রাখা ঠিক হয়েছে ? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছে, তাকে দাড় করিয়ে রাখা হয়নি। মেয়েটি বিনা অনুমতিতে পরীক্ষা দিচ্ছিলো। তাই তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে মাত্র। #