সুলতানা কামালকে নিয়ে রিজভীর বক্তব্যের প্রতিবাদে ২২ বিশিষ্টজন
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের একটি সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্যকে ‘আক্রমণাত্মক, অসংবেদনশীল, অশোভনীয় ও কুরুচিপূর্ণ’ উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) দেশের মানবাধিকার সংগঠক, শিক্ষক, আইনজীবী ও সাংবাদিকসহ ২২ জন বিশিষ্ট নাগরিক এ প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতি দানকারীরা হলেন- অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, হুমায়ূন কবীর, শামসুল হুদা, অধ্যাপক মিসবাহ কামাল, অধ্যাপক সাদিকা হালিম, সঞ্জীব দ্রং, রবীন্দ্র সরেন, পল্লব চাকমা, সানায়া আনসারী, অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, কাজল দেবনাথ, অ্যাডভোকেট মোখলেসুর রহমান বাদল, মোতাহার হোসেন আকন্দ, খুশি কবীর, জিনাত আরা হক, বেগম রোকেয়া, অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান, অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন, অধ্যাপক ড. এস এম মাসুম বিল্লাহ, তাপস কুমার দাস, অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডল ও ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল।
গণমাধ্যমে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, দীর্ঘ সময় ধরে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক, মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের গত ২ অক্টোবর ইন্ডিয়া টুডে’র সাক্ষাৎকারের প্রেক্ষিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আক্রমণাত্মক, অসংবেদনশীল, অশোভনীয় ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গত ৫ অক্টোবর বক্তব্য দেন। আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে সুলতানা কামালের সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতা সর্বজনবিদিত। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক জন হামফ্রি ফ্রিডম এওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন।
তারা বলেন, সুলতানা কামালের বিরুদ্ধে রুহুল কবির রিজভীর এ ধরনের কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ মানবিক মর্যাদার পরিপন্থী এবং ব্যক্তির মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সুলতানা কামাল সাধারণ জনগণের অধিকারের পক্ষে আজীবন কাজ করেছেন। তাকে ‘আওয়ামী অধিকার কর্মী’ বলে অভিযোগ করা অনভিপ্রেত এবং এর মাধ্যমে মানবাধিকার আন্দোলনের বিরুদ্ধে বিএনপির দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়। পাশাপাশি তাকে ছোট করবার হীন প্রয়াস বলে মনে হয়। শুধু তাই নয়, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন এবং মানবাধিকারকর্মী শাহরিয়ার কবিরের মতো বরেণ্য বুদ্ধিজীবী এবং মুক্তিযুদ্ধ গবেষকের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্যও অশোভনীয়, অগ্রহণযোগ্য ও চরম নিন্দনীয়।প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়েছে, অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল তার সাক্ষাৎকারে কিছু সুপ্রতিষ্ঠিত সত্য উদঘাটন করায় রিজভী যেভাবে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন তার মাধ্যমে তিনি এবং তার দলের দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। তার বক্তব্য প্রকারান্তরে মানবাধিকার আন্দোলনকে বিভক্ত করার অপচেষ্টা হিসেবে প্রতীয়মান হয় এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় যারা অবদান রেখেছেন তাদের প্রতি চরম অশ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে। অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের প্রতি এরূপ অন্যায় অগ্রহণযোগ্য এবং জনাব রিজভীর অবমাননাকর বক্তব্যের প্রতি তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি। আশা করছি আগামীতে তিনি এবং তার দল মানবাধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদানে বিরত থাকবেন।