শিরোনাম
ত্বকী হত্যার দশ বছরেও ঘাতক বিচারের আওতায় আসে না – রফিউর রাব্বি
নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ তানভীর মুহাম্মতদ ত্বকী হত্যার ১২২ মাস উপলক্ষে আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার ৮ মে সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এড. এবি সিদ্দিক, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মে র সদস্য সচিব কবি সাংবাদিক হালিম আজাদ, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মে র যুগ্ম আহবায়ক দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক এড. মাহাবুবুর রহমান মাসুম, মহিলা পরিষদের জেলা সভাপতি লক্ষ্মী চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি এড. প্রদপি ঘোস বাবু, বাসদ জেলা আহবায়ক নিখিল দাস, সিপিবির শহর সভাপতি আবদুল হাই শরীফ, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা, প্রগতী লেখক সংঘের জেলা সভাপতি জাকির হোসেন ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সংগঠক রাশিদা আক্তার।
রফিউর রাব্বি বলেন, সংবিধান ‘রাষ্ট্রের চোখে সকল নাগরিক সমান’ বললেও সরকারের চোখে তা নয়। সরকার সংবিধানের অনেক কিছুকেই তোয়াক্কা করে না। ভোটের বিষয়ে সরকার সংবিধানের দোহাই দিলেও প্রতিনিয়ত তারা সংবিধান লঙ্ঘন করে চলেছে। মানুষের ভোট ও গণতন্ত্র সহ বহু সাংবিধানিক অধিকারকে ভূলুন্ঠিত করেছে। আর তাই ত্বকী হত্যার দশ বছর পেরিয়ে গেলেও ঘাতক বিচারের আওতায় আসে না। তৈরী করে রাখা অভিযোগপত্রটি পর্যন্ত আদালতে পেশ করা হয় না। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা দ্ব্যার্থহীন ভাবে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না- আমরাও দ্ব্যার্থহীন ভাবে বলেতে চাই এ আইন বাতিল হবে, বাতিল হবে, বাতিল হবে। আর এ আইন বহাল থাকলে আমাদের এ কারাগারগুলো আগামীতে আপনাদের দ্বারাই পূর্ণ হবে। আপনাদের প্রত্যেককে অবশ্যই বিচারের আওতায় আসে হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইন্ডেমনিটি করে বিচার বন্ধ করা হয়েছিল। আমরা তার প্রতিবাদ করেছি। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চেয়েছি। কিন্তু আপনারা ক্ষমতায় এসে অঘোষিত ইন্ডেমনিটির মাধ্যমে ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে রেখেছেন। ত্বকীর ঘাতকদের পক্ষ নিয়েছেন, তাদের পুরস্কৃত করেছেন। আমরা এ বৈষম্যমূলক, গণবিরোধী বিচার-ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই। সংবিধানে উল্লেখিত জনগণের অধিকারগুলোর বাস্তবায়ন চাই। সাগর-রুনী, তনু সহ, নারায়ণগঞ্জে সংঘটিত সকল হত্যা ও গুম খুনের বিচার চাই।
হালিম আজাদ বলেন, তদন্ত সংস্থা র্যাব বলেছে আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অথচ আজমেরী ওসমানকে গ্রেপ্তার করা হয় নাই। আমরা দ্রæত আজমেরী ওসমানের গ্রেপ্তার চাই। এবং এ হত্যার নির্দেশদাতা শামীম ওসমানের গ্রেপ্তার চাই।
মাহাবুবুর রহমান মাসুম শামীম ওসমানের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা বলেন নারায়ণগঞ্জের সবাই ওসমান পরিবার। নারায়ণগঞ্জের মানুষ কখনো ঘাতকদের পক্ষে নয়। তিনি ত্বকী সহ সকর হত্যার বিচার দাবি করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজো আদালতে পেশ করা হয় নাই। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। #