শিরোনাম
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক মাসুদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা
নারায়ণগঞ্জের খবর ডেস্কঃ সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের পি এসের মামলায় দৈনিক সোজা সাপটা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আবু সাউদ মাসুদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় তার পিএস হাফিজুর রহমানের দায়ের করা মামলায় বুধবার (১০ মে) দুপুরে আমলী আদালত ‘ক অঞ্চল’র বিচারক মোনালিসা এ আদেশ দেন।
আবু সাউদ মাসুদ নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কার্যকরী কমিটির সদস্য। গত ২০ বছর যাবৎ দৈনিক মানবজমিন, দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক আমাদের সময় ও দৈনিক রূপালীসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় অত্যন্ত সুনামের সাথে কাজ করেছেন আবু সাউদ মাসুদ। তিনি একজন বলিষ্ট প্রতিবাদি সিনিয়র সাংবাদিক।
আবু সাউদ মাসুদ গ্রেপ্তারী পরোয়ানার বিষয়ে বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায় বা মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করিনি। আমার বিরুদ্ধে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও ওয়ারেন্ট করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, এই আইনে কোনো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা বা হয়রানী করা হবে না। কিন্তু সরকার তাদের সেই কথা রাখতে পারেনি। বিভিন্ন সময়ে আমরা দেখছি সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার জন্য এই আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমার বিরুদ্ধে মামলা এবং ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে। এই বিষয়ে আমি সরকারের উচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। একই সঙ্গে আইনীভাবেই আমি এই মামলা ও ওয়ারেন্টের মোকাবিলা করবো।
আবু সাউদ মাসুদের আইনজীবী এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আসলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে হরণ করার জন্যই এই আইনটি তৈরি করা হয়েছে। সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করার জন্য আইনটি তৈরি করেছে সরকার।
জানা গেছে, শামীম ওসমানকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে গত ৮ ডিসেম্বর রাতে দৈনিক সোজা সাপটা পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৯ ও ৩১ ধারায় মামলা দায়ের করে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) হাফিজুর রহমান।
এ মামলায় প্রথমে হাইকোর্ট থেকে দুই সপ্তাহের জামিন পান আবু সাউদ মাসুদ। পরবর্তীতে চার্জশীট প্রদানের পূর্ব পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করে সাইবার ট্রাইবুনাল আদালত। বুধবার আদালতে চার্জশীট প্রদান করে পুলিশ। পরবর্তীতে বিবাদীর আইনজীবী আদালতে টাইম পিটিশন চাইলে আদালত তা না মঞ্জুর করে আবু সাউদ মাসুদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে।
এর আগে, মামলার এজাহারে নিজেকে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সচিব পরিচয় দিয়ে বাদী হাফিজুর রহমান উল্লেখ করেন, সাংবাদিক আবু সাউদ মাসুদ তার পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘ইবলিশের খপ্পরে সোজাসাপটা’ শিরোনামে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ সংবাদ প্রকাশ করে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ছবি বিকৃত করে রাজনৈতিকভাবে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য তার বিরুদ্ধে ‘বিকৃত’ তথ্য প্রকাশ করে। প্রকাশিত তথ্যের সঙ্গে বাস্তবতার কোনও মিল নেই বলে মামলায় অভিযোগ করেন হাফিজুর রহমান। এজাহারে আরও বলা হয়, ওই শিরোনামের প্রতিবেদনটি পত্রিকার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়। এই প্রতিবেদনের কারণে পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে শামীম ওসমানের মানহানি হয়েছে। এ অবস্থায় তিনি সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সঙ্গে আলোচনা করে থানায় মামলা করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।#