শিরোনাম
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও গণমাধ্যমকর্মীদের উপর নিপীড়ন বন্ধের দাবি
নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে পথ সমাবেশ ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সময় সারাদেশে গণমাধ্যমকর্মীদের উপর নিপীড়ন বন্ধ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার সাংবাদিকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়। অনুশীলন’ নামে
গণমাধ্যমকর্মীদের একটি পাঠচক্র গ্রুপের আয়োজনে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে রোববার (২ এপ্রিল) বেলা সোয়া এগারোটায় এই কর্মসূচি শুরু হয়ে দুই ঘন্টাব্যাপী চলে।
নারায়ণগঞ্জের গণমাধ্যমকর্মী, শিল্পী, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক কর্মীদের পাশাপাশি পথচারীরাও স্বতস্ফূর্তভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে গণস্বাক্ষরে অংশ নেন। এই সময় শিল্পী অমল আকাশ ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল কর’ এবং শিল্পী সুমনা আক্তার ‘চিৎকার’ শিরোনামে পৃথক দু’টি পারফর্মেন্স আর্ট প্রদর্শন করেন। নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায় ও ছাত্রনেতা ফারহানা মুনা নিপীড়নবিরোধী কবিতা পাঠ করেন।
সাংবাদিক আফসানা আক্তারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম জীবন, সিদ্ধিরগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুল, প্রথম আলোর প্রতিনিধি মুজিবুল হক পলাশ, প্রথম আলোর সংবাদদাতা গোলাম রাব্বানী শিমুল, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, বন্ধুসভার সাবেক সাবেক সভাপতি সাব্বির আল ফাহাদ, সংস্কৃতি কর্মী জহিরুল ইসলাম মিন্টু প্রমুখ।
দ্য ডেইলি স্টারের নিজস্ব সংবাদদাতা সৌরভ হোসেন সিয়াম ও আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি সাবিত আল হাসান অনুষ্ঠান স ালনা করেন।
বক্তারা বলেন, ‘শিক্ষকরা শাসকগোষ্ঠীর নির্যাতনের পক্ষে বিবৃতি যখন দেয় তখন বুঝে নিতে হবে তারা গণমানুষের প্রতিনিধিত্ব করে না। শিক্ষক হলেই জাতির বিবেক ভাবার কোন সুযোগ নেই। কবি, লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীদের মতো সকল সাংবাদিকদেরও এক কাতারে দাঁড় করানোর কোন সুযোগ নাই। তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের মতো সাংবাদিকদেরও চরিত্র-চেহারা বুঝে নিতে হবে।
সাংবাদিকের মস্তক কোথাও বিক্রি হয়েছে কিনা তা বুঝে নিতে হবে। সাংবাদিকরা গণমানুষের কণ্ঠস্বর। তারা সবসময় রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে মানুষের কথা তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের মধ্যে সততা থাকতে হবে। আমরা শিকারি সাংবাদিকতা চাই না।’
মুক্তচিন্তা ও বাকস্বাধীনতা পরিপন্থী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়ে তারা আরও বলেন, ‘একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। মানুষের মধ্যে সমতা ফেরানোর জন্য, বাকস্বাধীনতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দেশের মানুষ প্রাণ দিয়েছে। কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে বাকস্বাধীনতাকে হরণ করা হচ্ছে। নিবর্তনমূলক এই আইন দিয়ে মানুষের কন্ঠরোধের চেষ্টা চলছে। বিগত সময়ে এই নারায়ণগঞ্জেও অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জভিত্তিক পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের ডোমেইন। ডোমেনইন বন্ধের পর পত্রিকা বন্ধেরও পায়তারা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে পত্রিকার ডিক্লারেশনও। ইতিহাস সাক্ষী, জোর করে মুখ বন্ধ করা যায় না। এতে বরং সারাদেশের মানুষের চিৎকার আরও বাড়বে।’
এগারো বছরেও সাংবাদিক সাগর সরওয়ার ও মেহেরুর রুনি হত্যাকান্ডের তদন্ত প্রতিবেদন না হওয়ায় নিন্দা জানান উপস্থিত বক্তারা। একইসাথে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা সকল মামলা প্রত্যাহার এবং এই মামলায় গ্রেপ্তার প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসের মুক্তির দাবি জানান তারা।
#