টাকার অভাবে বন্ধ নাচোলের ইলামিত্র পাঠাগার
ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী ইলা মিত্রের ২০ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। এই নেত্রীর স্মৃতি ধরে রাখতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে নির্মিত ইলামিত্র পাঠাগার ও সংস্কৃতি কেন্দ্রটি টাকার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে অর্থায়নে ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নেজামপুর রেল বাজারে পাঠাগারটি নির্মাণ করা হয়। এ পাঠাগার থেকে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা বই নিয়ে পড়তেন। কিন্তু এখন সেটি টাকার অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাঠাগারের ঘরটি নির্মিত হয়েছে বটগাছের নিচে। দীর্ঘদিন ধরে পাঠাগারটি বন্ধ থাকায় প্রবেশপথ ছেয়ে আছে আগাছায়। দেখে মনে হলো অনেকদিন ধরে কারো পা পড়ে না। আরেকটু এগোতেই দেখা গেলো দরজায় লাগানো তালাতেও জং ধরেছে। ঘরের তালা খুলতেই দেখা গেলো বই আর চেয়ার টেবিলে পড়েছে ধুলার আস্তরণ।জানা গেছে, দেড় বছরের বেশি সময় ধরে পাঠাগারটি বন্ধ। পাঠাগারটিতে স্থানীয় আদিবাসি শিক্ষার্থীরাই উপকৃত হতেন।সরণী ওঁরাও নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পাঠাগারটিতে অনেকগুলো বই ছিলো। এখন তেমন বই নেই। তাই পাঠাগারে কেউই পড়তে আসেনা। নতুন নতুন বই আসলে,আমরা অনেকে পড়তে যাবো।’হিংগু মুরমু নামের আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বেশির ভাগ লোকজনই গরিব। অভাব–অনটনের কারণে অনেক শিক্ষার্থীর পড়ালেখা হয় না। এসব শিক্ষার্থীকে সহায়তার জন্য পাঠাগারে পাঠ্যবইও রাখা আছে। বই নিয়ে পড়ে পরীক্ষা শেষে ফেরত দিয়ে যেতো তারা। পাঠাগার বন্ধ থাকায় সে সুযোগ মিলছে না।’স্থানীয় সাংবাদিক সাজিদ তৌহিদ বলেন, ‘প্রশাসনের দেওয়া আর্থিক সহায়তায় পাঠাগারটি পরিচালিত হয়। কিন্তু গত ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাঠাগারের কার্যক্রম এখন বন্ধ। এ ছাড়া অনেক বই পরে আছে পাঠকের কাছে।’পাঠাগারের সভাপতি শ্রী বিধান সিং বলেন, ‘পাঠাগারে সব রকমের বই আছে। এখান থেকে বই নিয়ে গিয়ে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করে। যার কারণে তাদের বই কেনার জন্য ভোগান্তি পহাতে হয় না। এর আগেও দুইবার তহবিল বন্ধের কারণে পাঠাগারের কার্যক্রম থেমে যায়। সঠিক সময়ে টাকা না পাওয়ায় পাঠাগারে লোক রাখতে পারিনা। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে এ পাঠাগারটি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে।’বিধান সিং পাঠাগারের সংকটের কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘ঘরটির সামনে একটি গর্ত আছে। জায়গটিতে পানি জমে থাকে। পাঠাগারে টয়লেট থাকলেও পানির ব্যবস্থা নাই। গরমের সময় লোকজন আসে, কিন্তু ফ্যানের (বৈদ্যুতিক পাখা) ব্যবস্থা নাই।’