ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ৪ লেন নির্মান কাজ ধীরগতি | যানজটের কবলে যাত্রী দুর্ভোগ
হাসান উল রাকিব – নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দুই লেন থেকে উন্নিত করে চার লেন সড়ক নির্মান কাজ শুরু হলেও চলাচলকারী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। আর এ দুর্ভোগের কারন হিসেবে যানজট, ভাঙ্গাসড়ক ও চারলেন নির্মানকারী প্রতিষ্ঠানের ধীরগতি কাজকে দায়ি করছেন ভুক্তভোগীরা। এ সড়কের কাঁচপুর থেকে গাউছিয়া পর্যন্ত দিনরাত প্রচন্ত যানজট, ভাঙ্গা সড়কে চলাচল যাত্রীদের আরো ভোগান্তিতে ফেলেছে। চার লেন নির্মানকারী ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান বলছে নির্মান কাজের অনুমতিপত্র পাওয়ার পর গত সাত মাসে সকলরকম প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করে একটি কালভার্ট নির্মান ও সড়কে বালু ভরাট কাজ দ্রত এগিয়েছে, আর স্থানীয় বাসিন্দা ও এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা অভিযোগ করছেন চার লেন প্রকল্প নির্মান কাজ ধীরগতিতে চলছে। ঢাক- সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ঢাকা থেকে সিলেট ২০৯ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নতি প্রকল্প শুরু হয়েছে।
এর মধ্যে এ চার লেন সড়ক নির্মান কাজে নারায়ণগঞ্জ জেলায় কাঁচপুর থেকে নরসীংদি সীমান্ত পর্যন্ত ১৮.৬৬ কিলোমিটার সড়কে চাললেন উন্নয়ন করা হবে। এ সড়কে ৫ টি কলভার্ট, ২টি ছোট ব্রীজ, ১ টি ফ্লাইওভার ব্রীজ সহ দুই পাশে সার্ভিস লেন সহ মোট ৬ লেন সড়ক নির্মান করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যায় ধরা হয়েছে ৯২৫.৩৬ কোটি টাকা। গত ২৪ অক্টোবর ২০২২ সালে চায়না (লংজিয়ান রোড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড) ও দেশী প্রতিষ্ঠান ম্যাকস ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেড যৌথ দুটি ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ৯২৫.৩৬ কোটি টাকা ব্যায়ে চার বছরের (নির্মানকাল) চুক্তি স্বাক্ষিত হয়। গত ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ নির্মান কাজের অনুমতি পেলে তারা নির্মান কাজ শুরু করে। গত সাত মাসে ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান যাত্রামুড়ায় কালভার্ট নির্মানে পাইলিং স্থাপন ও দুটি স্পটে বালু ভরাটের কাজ শুরু করেছে। ব্যাস্ততম এ মহাড়কের ১৮ কিলোমিটার সড়কের দু’পাশে ১০৮ টি দেশের বড় শিল্পকারখানা রয়েছে। যানজটের আরো একটি কারন প্রতিদিন এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬/৭ হাজার গাড়ি আসা যাওয়া করে, পাশাপাশি ঢাকা সিলেট এ মহাসড়কে যাত্রীবাহি গাড়ি সহ অন্যান্য যানবাহন মিলে প্রতিদিন গড়ে ৪০/৫০ হাজার যানবাহন চলাচল করে। পুরাতন জরাজীর্ণ দু’লেনের এ সড়কের অধিকাংশ ভাঙ্গা গর্ত সৃস্টি হয়েছে। এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী শ্রমিক ইব্রাহিম রহমান জানিয়েছেন, কাঁচপুর থেকে গাউছিয়া পর্যন্ত সড়কে অধিকাংশ সময় যানজট সৃস্টি হয়।
দিনরাত যখন তখন যানজটের কারনে ঘন্টার পর ঘন্টা দুর্ভোগে পড়তে হয়। সড়কের অনেক অংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় যাত্রীদের নাকাল অবস্থায় পড়তে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা শওকত আলী জানিয়েছেন, ঢাকা সিলেট চার লেনের কাজ ধীরগতিতে চলছে। এ প্রকল্পের কাজ দ্রুত সম্পূর্ণ না করলে চলাচলকারী যাত্রীদের দুর্ভোগ আরো বাড়বে। আমরা এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই। অন্যান্য যাত্রীরা একইভাবে অভিযোগ করেছে, যানজট আর ভাঙ্গাচুরা সড়কে চলাচল ও চারলেনের কাজ ধীর গতিতে হওয়ায় তারা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। এ সড়কে ঘন্টার পর ঘন্টা দিনরাত যখন তখন যানজট সৃস্টি হয়। এ বিষয়ে সাসেক ঢাক- সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প ১ এর উপ প্রকল্প ব্যাবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল আজিম জানিয়েছেন, কাজের অনুমতি পাওয়ার সাত মাসে প্রস্ততি নিয়ে কাজ অনেকটা এগিয়েছে। ব্যাস্ত এ সড়কে প্রচন্ড বাহনের চাপ। সড়কের দুইপাশে শিল্পকারখানার বর্জ্য ফেলে রাখায় এ নির্মান কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। তার পরেও সবমিলিয়ে চুক্তির চার বছরে মানসম্মত ভাবে এ প্রকল্পের নির্মান কাজ সম্পূর্ণ করতে পারবো আশা করছি।
আর যাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয়ে বলেন, বড় একটি প্রজেক্টের কাজ সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। অপর দিকে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় ১৮.৬৬ কিলোমিটার সড়কে চাইনিজ ও দেশের যোথ দুটি ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠানের সাথে চার বছর মেয়াদে চুক্তিতে তার কাজ শুরু করেছেন। আশা করছি এ মেয়াদে তারা কাজ শেষ করতে পারবে। #