শিরোনাম
হৃদয়-রাজু বাহিনীর অপরাধ কর্মকান্ডে অতিষ্ট আতংকিত কুতুবপুর এলাকাবাসি
নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানাধীন কুতুবপুরে হৃদয় ও রাজু’র শেল্টারে সংঘবদ্ধ একটি অপরাধ চক্রের সীমাহীন অপরাধ কর্মকান্ডে অতিষ্ট পাগলা নন্দলালপুর দক্ষিণ মহল্লাসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকার হাজারো মানুষ।
হরহামেশাই প্রকাশ্যে বিক্রি ও সেবন করছে ভয়ানক মাদক। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা। চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসীর।
অপহরণ, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বেশ কয়েকটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। আন্তঃজেলা ডাকাতি ও অপহরণসহ একাধিক মামলাও রয়েছে এই সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের একাধিক সদস্যর বিরুদ্ধে। এমন ভয়ংকর অপরাধ কর্মকান্ডে দিশেহারা স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
শুধু তা-ই নয়, হৃদয় ও রাজু’র অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে অর্ধশত বখাটে কিশোর ও যুবকদের সংঘবদ্ধ একটি অপরাধ চক্র।
আর এই শক্তিশালী চক্রে দেশের আলোচিত মলম-অজ্ঞানপার্টি সহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের কয়েকজন সদস্য অন্যতম। এমনিই এক চা ল্যকর অপরাধ চক্রের তথ্য বেড়িয়ে এসেছে অনুসন্ধানে।
পাগলা, নন্দলালপুর দক্ষিণ মহল্লাসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকার অপকর্মের মূল হোতা এবং শেল্টারদাতা দক্ষিণ মহল্লা প ায়েত কমিটির সভাপতি ও কথিত বিএনপি নেতা আসলাম মিয়ার ছেলে মোঃ হৃদয় (৩৩), একই এলাকার চলচ্চিত্র পরিচালক এফ আই মানিকের ছেলে রাজু ওরফে হিরোইনছি রাজু (৩৪)। অপরাধ চক্রের অন্যান্যদের মধ্যে নন্দলালপুর দক্ষিণ মহল্লা এলাকার অস্থায়ী বাসিন্দা কথিত শ্রমিকদল নেতা দেলোয়ার হোসেনের ছেলে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের অন্যতম সদস্য শাহীন ওরফে কাইল্লা শাহীন (২৮), আবু বক্করের ছেলে রাকিব (২৭), বাবুল ওরফে কানা বাবুল (৩২), রাব্বি ওরফে টিকটিকি রাব্বি (২৭), অপু ওরফে পিনখোর অপু (২৮), ইসমাইল (২৮), রায়হান (২৬) সহ প্রায় কয়েক ডজন সদস্য সক্রিয়।
কুতুবপুর ইউনিয়নের অন্যতম বাণিজ্যিক শিল্প এলাকা হওয়ার কারণে নন্দলালপুরে শ্রমিকের বেশে অনেক বহিরাগত চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী এখানে আত্মগোপনে রয়েছে। ফলে বেশির ভাগ অপরাধী বহিরাগত হওয়ায় তারা বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করলেও রয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে।
দেশের প্রচলিত আইন ও থানা পুলিশকে তোয়াক্কা না করে পান থেকে চুন খসলেই অবৈধ অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া দেওয়ার মত গুরুতর অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এমন ভয়ংকর অপরাধ কর্মকান্ডের কারণে নন্দলালপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার লোকজন এ চক্রের কাছে জিম্মি। হৃদয়-রাজু ও তার লোকজনের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। আর একারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে এলাকায় অপরাধের রামরাজত্ব কায়েম করে চলেছে।
সূত্রে জানা যায়, নন্দলালপুর দক্ষিণ মহল্লা প ায়েত কমিটির সভাপতি ও কথিত বিএনপি নেতা আসলাম মিয়ার ছত্রছায়ায় তার ছেলে হৃদয় ও রাজু’র সেল্টারেই বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে চক্রটি। এছাড়াও চক্রের একাধিক সদস্য টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে কাজ করে কুতুবপুরের বিভিন্ন এলাকায়। অভিযোগ রয়েছে, এলাকায় বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ব্যক্তি, চিহ্নিত মাদক কারবারি প্রকাশ্যে পুলিশের সামনে ঘুরে বেড়ায়। অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীরা প ায়েত কমিটি ও থানায় গিয়ে প্রতিকারের বদলে বিড়ম্বনা এবং হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এমনকি একই রাতে একই এলাকার একাধিক বাড়িতে অভিযুক্ত অপরাধ চক্রের সদস্যরা হানা দিচ্ছে। বাড়তি ঝামেলার ভয়ে অনেকেই পুলিশে অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকে।
নাম প্রকাশ্যে অনইচ্ছুক এক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, বেশকিছুদিন ধরে এ এলাকায় মাদকাসক্ত অপরাধীদের উপদ্রব ও বখাটে যুবকদের উৎপাত বেড়ে গেছে। ফলে সুযোগ পেলেই নানা অপরাধ প্রবণতা ঘটাচ্ছে অপরাধী চক্র। এতে বাসাবাড়ী, দোকানপাট খালি রেখে স্বস্তিতে থাকতে পারছেন না এলাকাবাসী। এতে জনমনে চোর আতংক বাড়ছে। এসব ঘটনায় পুলিশকে অবগত না করার কারণে নেয়া হচ্ছে না প্রয়োজনীয় আইনী পদক্ষেপ। অপরাধ প্রবণতা রোধে পুলিশী টহল বৃদ্ধিসহ এলাকায় নিরাপত্তা ও শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। শান্তিতে বসবাস করার জন্য অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরে আযম জানান, আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে এধরণের চক্রের অনেক সদস্যকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। দিবারাত্রি আমাদের থানা পুলিশের টিম টহল দেন এলাকাজুড়ে। কোনো প্রকার অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবে না। #