শিক্ষকতা ছেড়ে কৃষিকাজ করে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার পেলেন ছানোয়ার
শিক্ষকতা ছেড়ে গ্রামে ফিরে শুরু করেন কৃষিকাজ। প্রচলিত ফসলের বাইরেও ফল চাষ শুরু করেন। কয়েক বছরের মধ্যে তার বাণিজ্যিক কৃষি খামার গড়ে ওঠে। বিভিন্ন ফল চাষ করে নিজে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাকে দেখে এলাকার অনেকে ফল চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। এবার তিনি লাভ করলেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৬।বাণিজ্যিকভিত্তিক খামার স্থাপনের মাধ্যমে কৃষি উন্নয়নে অবদান রাখায় এই পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তি হলেন ছানোয়ার হোসেন। তিনি টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মহিষমারা গ্রামের মো. জামাল হোসেন ও মোছা. আনোয়ারা বেগমের সন্তান। বুধবার (১২ অক্টোবর) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রোঞ্জপদক প্রদান করেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন। ছানোয়ার হোসেন ১৯৯২ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর সিলেটের একটি স্কুলে শিক্ষকতায় যোগ দেন। পাঁচ বছর শিক্ষকতা করার পর চলে আসেন নিজ গ্রামে। পৈত্রিক জমিতে আগে থেকে আনারস চাষ হতো। ছানোয়ার হোসেন প্রথমে আনারস চাষ দিয়ে কৃষিতে যুক্ত হন। পরে নতুন নতুন ফল চাষ শুরু করেন। তিনি আনারসের পাশাপাশি মাল্টা, ড্রাগন, কলা, পেয়ারা কফি চাষ করছেন।ছানোয়ার হোসেন জানান, বর্তমানে তার পাঁচ একর জমিতে আনারস, চার একর জমিতে মাল্টা, দুই একর জমিতে কলা, পেয়ারা ও ড্রাগন এক একর করে জমিতে এবং ৫০ শতাংশ জমিতে কফি চাষ করছেন। এছাড়াও তিন একর জমিতে ধান চাষ করছেন। এতে ভালো লাভবান হচ্ছে। নিজের পৈত্রিক জমি এবং অন্যের জমি লিজ নিয়ে এ চাষবাস করছেন তিনি।কৃষির আয় থেকে ছানোয়ার হোসেন নিজের গ্রামে ২০১৪ সালে গড়ে তুলেছেন ‘মহিষমারা কলেজ’। এ কলেজের জন্য অর্থের যোগান দিয়েছেন কৃষির আয় থেকে। জমিও দান করেছেন তিনি। এ বছর কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়েছে।মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বজলুর রশিদ খান জানান, ছানোয়ার হোসেন একজন আদর্শ কৃষক। ফল চাষে সফলতা দেখে অনেকে তাকে অনুসরণ করেছেন। তারাও সফল ফলচাষি হয়েছেন। ছানোয়ারের বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার পাওয়ায় এলাকার মানুষ আনন্দিত।মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল জানান, ছানোয়ার হোসেন সফল কৃষক। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে সব সময় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি শুধু নিজে চাষবাস করেন না, অন্যদেরও সফলভাবে চাষবাসের পরামর্শ দেন। ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘চাকরি ছেড়ে গ্রামে এসে কৃষি কাজ করে ভালো আছি, সুখে আছি। নিজে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছি। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান করতে পেরেছি এটাই আমার বড় প্রাপ্তি।’