শিরোনাম
বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে বাসদের মানববন্ধন
নারায়ণগঞ্জের খবর ডেস্কঃ বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে ফতুল্লায় বাসদের মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।
ধাপে ধাপে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করা সহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়,
বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার, ধাপে ধাপে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাতিল, নিত্যপণ্যেও দাম কমানো, দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ীদের শাস্তির দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ফতুল্লা থানা শাখার উদ্যোগে আজ বিকাল ৩ টায় ফতুল্লা রেল স্টেশনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ ফতুল্লা থানার আহবায়ক এম এ মিল্টনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব,
গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, বাসদ ফতুল্লা থানার সদস্যসচিব এস এম কাদির, ফতুল্লা ইউনিয়ন কমিটির আহবায়ক বিপ্লব আহমেদ মিঠু, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জামাল হোসেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার আহŸায়ক সাইফুল ইসলাম, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট ফতুল্লা আ লিক শাখার সভাপতি আশেকে রাসুল শাওন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার ১ ফেব্রæয়ারি থেকে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। সরকারের নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম গড়ে ৭০ পয়সা বৃদ্ধি করেছে। ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করলেও ১ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রাহকদের বাড়তি দাম দিতে হয়েছে। দাম সমন্বয়ের নামে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করে জনগণের উপর চাপানো হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সাল থেকে সমন্বয়ের নামে গ্রাহক পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে ১৪ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। সর্বশেষ গত ২০২৩ এর জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মার্চ তিন মাস পর্যায়ক্রমে ৫% করে নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল। ডলারের সাথে টাকার মূল্যমানের হ্রাসের যে অজুহাত দেয়া হয়েছে তার প্রতিবাদ করে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আমদানি রপ্তানির নামে ডলার পাচার, ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ এর সঙ্গে সাধারণ মানুষ জড়িত নয় অথচ এর দায় বহন করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকেই। ¯øাবভিত্তিক নিন্ম থেকে উপর পর্যন্ত বিভিন্ন মাত্রায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি নিম্ন আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্তের দুর্ভোগ যেমন বাড়াবে তেমনি সরকার ও লুটপাটকারীদের দায় এড়ানোর পথ তৈরি করবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জ্বালানী বিশেষজ্ঞরা এবং বাম জোট বহু দিন থেকে বলে আসছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতসহ অন্যান্যক্ষেত্রে চলমান দুর্নীতি ও অপচয় রোধ করলে এবং তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে গ্যাস ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করলে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে কম দামে বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব। তাছাড়া সক্ষমতা থাকা সত্তে¡ও সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন না করে ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় ও অলস বসিয়ে রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ভর্তুকি দেয়ার ভুলনীতি অনুসরণ দুর্নীতিবাজদেরই প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে। সরকার ভর্তুকি সমন্বয়ের নামে আগামী তিন বছর মূল্য বৃদ্ধি পর্যায়ক্রমে করে যাবে। ফেব্রæয়ারি থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। সামনে গ্রাহক পর্যায়েও গ্যাসের দাম বাড়বে। জ¦ালানি তেলের মূল্য মার্চ মাস থেকে প্রতি মাসে সমন্বয় করা হচ্ছে। সমন্বয়ের কথা বললেও বাস্তবে গড়পড়তায় দাম বাড়েই। এলপি গ্যাসের মূল্য এর প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত।
নেতৃবৃন্দ বিদ্যুৎসহ জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে নাগরিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহŸান জানান। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করে সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অপচয় রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান। একই সাথে সকল প্রকার অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট ও সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বি। সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে ইতিমধ্যে চলে গেছে। তারপরও দাম বেড়েই চলছে। এর মধ্যে রমজানকে সামনে রেখে পেঁয়াজ, চিনি, ছোলা, খেজুর, গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। দাম বাড়ানোর জন্য সিন্ডিকেটের কথা ও নাম পত্রপত্রিকায় এসেছে। সরকার এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় না। এরা মন্ত্রীদের কথা শোনেও না। বিনাভোটের সরকার এদের অসীম ক্ষমতা প্রদান করেছে। জনগণের প্রয়োজন সরকারের কাছে মূল্যহীন। এরমধ্যে বিদ্যুৎসহ জ¦ালানির দাম বৃদ্ধি নিত্যপণ্যের দাম আরেকদফা বাড়াবে। নেতৃবৃন্দ নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ, দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া ও বিদ্যুতের বর্ধিত দাম প্রত্যাহারে দাবি জানান। #