বিশেষ কোচিং ফি’র জন্য পরীক্ষা বন্ধ করে ছাত্রীকে দাঁড় করিয়ে রাখলেন শিক্ষক
নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ কথিত ‘স্পেশাল ক্লাস’ এর ফি ছয় হাজার টাকা না দেয়ায় স্কুলের টেষ্ট পরীক্ষার হল থেকে উঠিয়ে প্রায় পৌনে এক ঘন্টা দাড় করিয়ে রাখা হয়েছে এক ছাত্রীকে। ‘বেতন দিতে পারোনা এখানে মরতে এসেছো কেনো, অন্য স্কুলে গিয়ে মরো এমন’ কথা বলা হয়েছে ঐ ছাত্রীকে। ঘটনা নগরীর মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের। অভিযোগ স্কুলের এসিসট্যান্ট হেড মিষ্ট্রেস লায়লা আক্তারের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে ঐ শিক্ষিকাকে ফোন দেয়া হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সময়ে এসে কথা বলতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সময়ের বাইরে ফোন দেয়া অপরাধ।’ মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী সুচনা দাস নিতু জানায়, গতকাল মঙ্গলবার ছিলো তার এস এস সি’র টেষ্ট পরীক্ষার ভ‚গোল পরীক্ষা। তার বাবা যুবরাজ রবি দাস একটি প্রতিষ্ঠানের গার্ড। মেধাবী ছাত্রী সুচনা টিউশনি করে নিজের খরচ নিজেই চালায়। তার রোল নাম্বার তিন। স্কুলে তার কোনো মাসের বেতন বাকি নেই। পরীক্ষার ফি-ও দেয়া। তবে কথিত ‘স্পেশাল ক্লাস’ এর এর ফি সে দিতে পারেনি। স্পেশাল ক্লাস সে করতেও চায়নি। কারন এটি তার দরকার নেই। এছাড়া এটির ফি দেয়ার তার সাধ্য নেই। সে স্কুল থেকে বেতন মওকুফ চেয়েছিলো। সেটি তাকে না দিয়ে তখন বলা হয়েছিলো পুরো বেতন দিয়ে গেলে স্পেশাল ক্লাসের ফি নেয়া হবে না। সে অনুযায়ী সে স্পেশাল ক্লাস করে। কিন্তু এখন স্কুলের এসিসট্যান্ট হেড মিস্ট্রেস তার কাছে স্পেশাল ক্লাসের ফি চাচ্ছে। না দেয়ায় এর আগে তাকে দুই দিন ক্লাস থেকে বের করে দাড় করিয়ে রাখা হয়। মঙ্গলবারও পরীক্ষার সময় তাকে প্রায় পৌনে এক ঘন্টা ক্লাস থেকে বের করে দাড় করিয়ে রাখে এই এসিসট্যান্ট হেড মিস্ট্রেস। নিতুর মা জানায়, পরীক্ষার মধ্যে এমন অপমানে নিতু অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরীক্ষা শেষ করে বের হয়ে সে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যায়। তার জ্বর এসে যায়। তিনি বলেন, শিশু হলেও তারও মান-ইজ্জত আছে। বেতন দিতে পারবে না বলে এভাবে অপমান করতে হবে ? একজন ধনী মানুষের বা ক্ষমতাবান মানুষের সন্তান হলে কি শিক্ষিকা এমনভাবে অপমান করতে পারতো ? তিনি জানান, বুধবার তার মেয়ের বিজ্ঞান পরীক্ষা। পরীক্ষার আগে তার অভিভাবককে নিয়ে ও পরীক্ষার ফী কমপক্ষে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে স্কুলে যেতে বলেছে। নইলে তাকে পরীক্ষা দিতে দেবেনা বলা হয়েছে।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষিকা লায়লা আক্তারকে ফোন দেয়া হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সময়ে এসে কথা বলতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সময়ের বাইরে ফোন দেয়া অপরাধ।’ অভিযোগ সন্ধার পরে এসেছে তাই আপনাকে সন্ধার পরে ফোন দেয়া হয়েছে, আর অভিযোগ ব্যাক্তি আপনার বিরুদ্ধে – তাকে এ বিষয়গুলি স্মরন করিয়ে দিলে তিনি উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে বলতে ফোন রেখে দেন।এ ব্যাপারে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাচ্চার অভিভাবককে যেহেতু স্কুলে দেখা করতে বলা হয়েছে তারা দেখা করুক। দেখা করার পরে যদি স্কুলের শিক্ষকদের কথা তাদের মনপুতঃ না হয় তাহলে আমার সাথে কথা বলবে। আমি চেষ্টা করবো তাদের সমস্যা সমাধান করতে। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। #