শিরোনাম
মহানবী রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের ইতিহাস
হাসান উল রাজিব – নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ৬১০ খ্রিস্টাব্দে আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুওয়াত লাভ করেন,তারপর থেকে তিনি মক্কার মানুষদেরকে আল্লাহর পথে আসার জন্য দাওয়াত দিতে থাকেন। আল্লাহকে অস্বীকার কারীদের কে এক আল্লাহর দিকে দাওয়াত দিতে থাকেন। কিন্তু তার প্রিয়জনেরা তার বিরোধিতা করেন। তখন তিনি লাগাতার তিন বছর গোপনে মানুষদেরকে মূর্তিপূজা ছেরে এক আল্লাহর দিকে আহবান করেন। মদিনায় হিজরত
এরপর তিনি আল্লাহর নির্দেশে প্রকাশ্যে সবাইকে এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার জন্য ঘোষণা করেন। তারপর থেকে মক্কার কাফেররা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর প্রতি বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র শুরু করেন। শুরু হয় তারউপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার নির্যাতন। তারপরও তিনি মক্কার মানুষদেরকে এক আল্লাহর পথে ডাকতে থাকেন।
মদিনায় হিজরত
“দারুন নাদওয়া” নামক মক্কার কাফেরদের একটি নির্দিষ্ট জায়গা ছিল। সেখানে তারা বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ও আলোচনা বৈঠক করেন। আবু জাহেল মক্কার সকল কাফেরদেরকে সেখানে ডেকে নিয়ে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে, মক্কা থেকে উৎখাত করার জন্য পরামর্শ বসালেন। বিভিন্ন জনে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিল, কেউ বলল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বন্দি করে রাখার জন্য, আবার কেউ বলল হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে নির্বাসনে পাঠানোর জন্য, আবার কেউ কেউ বলল মোহাম্মদ (সাঃ) যেখানে যাবে সেখানে তাঁর অনুসারীরা বাড়তে থাকবে, পরে একসময় আমাদের জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে যাবে। তখন আবু জাহেল ভেবেচিন্তে পরামর্শ দিলো হযরত মুহাম্মদকে (সাঃ) কে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য। আবু জাহেল পরামর্শ দিল মক্কার সকল গোত্র থেকে একজন একজন করে বলিষ্ঠ যুবক একত্রিত হয়ে সবাই একসাথে মোহাম্মদ (সাঃ) উপর হামলা করে মুহাম্মদকে দুনিয়া থেকে চিরতরে বিদায় করে দিবে। তখন হাসেমি গোত্র মক্কার সকলের গোত্রের সাথে একাই লড়াই করতে পারবে না। এরপর ঘোষণা করে, মোহাম্মদ (সাঃ)কে মৃত অথবা জীবিত যে ধরে আনতে পারবে তাকে এক শত উট পুরস্কার দেওয়া হবে।ঘোষণা শোনার সাথে সাথে মক্কার সকল গোত্রের বলিষ্ঠ যুবকেরা মোহাম্মদ (সাঃ)কে ধরার জন্য বের হয়ে গেল ।
আল্লাহ তাআলা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে ওহীর মাধ্যমে কাফেরদের সকল ষড়যন্ত্র কথা জানিয়ে দেন, এবং মক্কা থেকে হিজরত করার জন্য নির্দেশ দেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তার আপন চাচাতো ভাই আলী (রাঃ) কে তার বিছানায় রেখে, মদিনায় হিজরতের জন্য হযরত আবু বকর( রাঃ) কে নিয়ে রওনা হন। যাওয়ার সময় তিনি বায়তুল্লার দিকে তাকিয়ে বলেন হে মক্কা খোদার কসম তুমি আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় জায়গা, যদি তোমার অধিবাসীরা আমাকে তাড়িয়ে না দিতো তাহলে আমি কখনো তোমাকে ছেড়ে যেতাম না।
মদিনার দিকে হিজরত মদিনায় হিজরত
আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে হিজরতের নির্দেশ পেয়ে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৬২২ খ্রিস্টাব্দের ১২ সেপ্টেম্বর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন।২৩ শে সেপ্টেম্বর ৬২২ খ্রিস্টাব্দে ৮ রবিউল আউয়াল মদিনার পার্শ্ববর্তী এলাকা কোবায় গিয়ে পৌঁছান। ২৭ সেপ্টেম্বর ৬২২ খ্রিস্টাব্দে ১২ রবিউল আউয়াল মদিনায় গিয়ে পৌঁছান তিনি, মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিজরী কাল থেকে হিজরী সনের গণনা শুরু হয়।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরত করার আগে তার কিছু সাহাবীদেরকে মদিনায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম তাদের দুই মাস পরে মদিনায় গিয়ে পৌঁছলেন। হিজরতের সময় মহানবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সাথে ছিলেন, আবু বকর (রাঃ) ও আবু বকর (রাঃ) এর গোলাম আমের ইবনে ফুহাইরা ও পথপ্রদর্শক হিসেবে ছিলেন আব্দুল্লাহ ইবনে আরিকত দুয়ালি ছিলেন। পথের মধ্যে তিনদিন ছাওর গুহায় মধ্যে আশ্রয় নেন।
এদিকে মদীনাবাসীরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আগমন এর কথা শুনে, তারা আনন্দে প্রতিদিনের মদিনার বাহিরে এসে দূর থেকে কোন আগন্তুক আসে কিনা তার অপেক্ষায় থাকতেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম ভরদুপুরে মদিনায় গিয়ে পৌঁছেন। মদীনাবাসীরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের খুশিতে বিভিন্ন ধরনের কবিতা আবৃত্তি করেন। #