নারায়ণগঞ্জ  বৃহস্পতিবার | ১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ | ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ হেমন্তকাল | ১১ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

শিরোনাম
  |   পূর্বাচল লেকের পাড়ে উদ্ধার হওয়া পলিথিনে মোড়ানো খন্ড বিখন্ড মরদেটি কার ?    |   জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে র‍্যালী গণসমাবেশ    |   সোনারগাঁ বিএনপির উপজেলা ও পৌর কার্যালয় উদ্বোধন    |   সকল রুটে বাস ভাড়া কামানো দাবিতে ৪০২ জন আইনজীবীর স্মারকলিপি প্রদান   |   অটো চাপায় শিশু শিক্ষার্থী নয়ন তারা নিহত   |   ১২ দিনেও সন্ধান মেলেনি মিছিল থেকে হারিয়ে যাওয়া বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ইলিয়াস    |   জাতীয় বিল্পব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বন্দর থানা বিএনপি’র বর্ণাঢ্য র‍্যালী   |   দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদকের পিতা ভাষা সৈনিক আবুবকর সিদ্দিকীর ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী   |   শ্রমিক অসন্তোষে বিসিক শিল্প নগরীতে গার্মেন্টস ভাংচুর, সড়ক অবরোধ   |   ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম গ্রেপ্তার   |   ঐতিহাসিক বেতিয়ারা দিবস পালনে শহীদদের স্মরন করলো সমমনা    |   ফুলপাখি পাঠশালার ৪ দিনব্যাপী চিত্রকর্ম প্রদর্শনী শুরু    |   নারায়ণগঞ্জে মোহনা টিভির ১৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন   |   সোনারগাঁয়ে ব্যবসায়ীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তারের অভিযোগ   |   নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে হামলার ঘটনায় অধ্যাপক মামুন মাহমুদের নিন্দা   |   আড়াইহাজারে ভাঙচুরের মামলার দুই আসামি গ্রেফতার    |   মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ার সন্ত্রাসী হামলায় ৩ সহদোরসহ ৫ জন আহত   |   নিরীহ যুবককে আটক করে হত্যা মামলায় চালান   |   বদিউজ্জামান হত্যা মামলায় জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদির গ্রেপ্তার   |   জেএসডি’র ৫২তম বার্ষিকী উপলক্ষে নগরীতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
 প্রচ্ছদ   শীর্ষ খবর   তাঁত শ্রমিকের মেয়ে থেকে এক জয়িতার জীবন কাহিনী !
তাঁত শ্রমিকের মেয়ে থেকে এক জয়িতার জীবন কাহিনী !
  শীর্ষ খবর || নারায়ণগঞ্জেরখবর.কম
প্রকাশিত: শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩
নারায়ণগঞ্জের খবর ডেস্কঃ  শুধু ব্যক্তি বা পরিবার নয়, পরিবার জয় করে যিনি জয় করে নিয়েছেন সমাজ; তিনিই জয়িতা। জয়িতারা সংগ্রামী অপ্রতিরোধ্য নারীর এক প্রতীকী। যে কেবল নিজের অদম্য ইচ্ছাকে সম্বল আর চরম প্রতিকূলতাকে জয়করে তৃণমূল থেকে সবার অলক্ষ্যে সমাজে নিজের জন্য জায়গা করে নিয়েছেন তার নামই আজমিয়ারা পারভীন। এ বছর বেগম রোকেয়া দিবসে নারায়ণগঞ্জ জেলায় জয়িতা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন আজমিয়ারা পারভীন। শিক্ষা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ সরকারের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর তাকে এই স্বীকৃতি দেয়।
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলায় জেলা প্রশাসন ও মহিলা অধিদপ্তরের আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে পাঁচ জয়িতার হাতে পুরস্কার তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক। জেলা পর্যায়ে শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য আজমিয়ারা পারভীনকে এই সম্মাননা দেয়া হয়।
আজমিয়ারা পারভীন সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের গাছাবাড়ীর মোঃ আমজাদ হোসেন আকন্দ ও রওশন আরা বেগমের প্রথম সন্তান। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
জয়িতা হচ্ছে সমাজের সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল নারীর একটি প্রতিকী নাম। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূলের সফল নারী তথা জয়িতাদের অনপ্র্রানিত করবে। সমগ্র সমাজ নারী বান্ধব হবে এবং এতে করে সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ ত্বরান্বিত করবে। আজমিয়ারা পারভীন হচ্ছেন তারই এক প্রতীকী। নিজে শিক্ষিত হতে গিয়ে বাঁধা বিপত্তির প্রতিকূলতা জয় করে বর্তমান শিক্ষা ক্ষেত্রে রেখে চলেছেন অবদান এ নারী।
আজমিয়ারা অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ছিলেন পেশায় একজন তাঁত শ্রমিক আর মা গৃহিণী। এক টুকরো জমিতেই ছিলো তাদের বাস। চার ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।তাঁত শ্রমিক বাবার পক্ষে খাবার জোগাড় করা ছিলো কঠিন। সেখানে আজমিয়ারা সহ তার ভাই বোনদের লেখা পড়া চালিয়ে নেওয়া ছিলো তার বাবার পক্ষে আরো কঠিন। তারপরও ছিলো পড়াশুনার প্রতি আজমিয়ারার প্রচন্ড আগ্রহ। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও প্রথম শ্রেনী থেকে চতুর্থ শ্রেনী পর্যন্ত পড়ালেখা চালিয়ে আসলেও বিপত্তি বাঁধে প ম শ্রেনীতে পরীক্ষার জন্য ১০ টা ফি দিতে গিয়ে। গরীব বাবার পক্ষে আশি দশকে মেয়ের পরীক্ষার জন্য ১০ টাকা ফি দেওয়াটা ছিলো অসম্ভব ব্যাপার যার ফলে বাবা জানায় অপরাগ।
১৯৮৬ সালে মায়ের মামার বাসা ঢাকায় আসেন বুকে অন্য রকম এক স্বপ্ন নিয়ে ছোট আজমিয়ারা। অনেক বড় স্কুলে পড়বেন কত সহপাঠী থাকবে। আজমিয়ারা অদম্য আগ্রহ ও মেধা দেখে নানা তাকে ধানমন্ডিতে অবস্থিত আলী হোসেন গালর্স হাই স্কুলে ৭ম শ্রেনীতে ভর্তি করিয়ে দেন।
সেখান থেকেই আজমিয়ারা স্বপ্ন যেন শুরু হতে চললো। একে একে প্রত্যেক শ্রেনীতে ১ম হতে থাকেন এবং ১৯৯০ সালে মানবিক বিভাগ থেকে তিনটি লেটার মার্ক সহ ১ম বিভাগে ৭০২ নম্বর পেয়ে স্কুলে সর্বশ্রেষ্ঠ হবার কৃতিত্ব অর্জন করেন। এই সাফল্য তার ভিতর আরো অনুপ্রেরণা জোগায়। হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর অধীনে মেধা লালন প্রকল্পের আওতায় দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সুদ মুক্ত ঋণ প্রদান করে ১৯৯০ সালে তার সদস্য হয়ে ১৯৯২ সালে সংস্থা থেকে ঋণ, সরকারি বৃত্তি ও টিউশনি করে লালমাটিয়া মহিলা কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে ১ম বিভাগে ৭২১ নম্বর ও দুইটি লেটার নম্বর নিয়ে পাশ করেন আজমিয়ারা। ১৯৯২-৯৩ শিক্ষাবর্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়ে টিউশনি চালিয়ে ১৯৯৫ সালে অনার্স পাশ করেন এবং ১৯৯৬ সালে সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ে দ্বিতীয় শ্রেনীতে মাস্টার্স পাশ করেন। পড়ালেখা শেষ করে শিক্ষকতা পেশাকে বেছে নিয়ে পরিবারকে স্বচ্ছল করতে ভূমিকা রাখেন।
বৈবাহিক সূত্রে তিনি নারায়ণগঞ্জের এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন এবং বিয়ের এক বছরের মাথায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকুরী হয়। ২২ বছর যাবৎ শিক্ষকতা পেশায় কর্মরত আছেন একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। তাদেরও উচ্চ শিক্ষায় মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। বড় ছেলে কানাডায় পড়ছেন এবং ছোট মেয়ে ড.মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে একাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থী।
তিনি একাধারে একজন শত বাঁধা বিপত্তি পার করে আসা একজন সফল শিক্ষিত নারী তার সাথে একজন শিক্ষক। শিক্ষার আলো বিস্তার করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেন এই নারী। শিক্ষকতা যে শুধু মাত্র একটি পেশা নয় এটি একটি দায়িত্ব তা মনে প্রানে বিশ্বাস করেন। তাই তো জাতি গঠনের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলতে ভুমিকা রেছে চলেছেন তিনি। ছাত্রীদেরকে শিক্ষিত হতে এবং স্বাবলম্বী হতে সব সময় জোগান অনুপ্রেরণা। তাই শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি অসহায় ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের নিরবে করে যান সাহায্য। কাউকে শিক্ষা উপকরণ কিনে দিয়ে সাহায্য করে, কাউকে বা করেন বেতন, ভর্তিতে আর্থিকভাবে সহযোগিতা। তার সহযোগিতায় প্রতি বছর দুই তিনজন দরিদ্র শিক্ষার্থীরা করতে পারছে পড়ালেখা। একই সাথে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপেও করেন আর্থিক সহযোগিতা সম্পূর্ণ নিরবে নিরলসভাবে। #

নার্সারীতে সফলতা পেয়ে নার্সারী নুরুল ইসলাম সাত বার অর্জন করেছেন জেলা প্রশাসনের সম্মাননা পদক

ফেইসবুকে আমরা

এ সম্পর্কিত আরো খবর...

error: Content is protected !!
error: Content is protected !!