শিরোনাম
নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে ভোট যুদ্ধে ৮ প্রার্থী | লাঙ্গল ঠেকাতে একজোট আওয়ামী লীগ
সুমন মিয়া – সোনারগাঁ প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে নৌকা-লাঙ্গলের চ্যালেঞ্জিং লড়াই হতে যাচ্ছে। আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কায়সার ১০ বছর পর আসনটি ফিরে পেতে মরিয়া। অপরদিকে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকা হ্যাটট্রিক বিজয় নিশ্চিত করতে আটঘাট বেঁধে মাঠে নামছে। এতে করে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা-লাঙ্গলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, গত দুই সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জোটের স্বার্থে শেষ মুহূর্তে সরে যেতে হয়। এ নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মনে ক্ষোভ ছিল। দীর্ঘ ১০ বছর পর এবার এ আসনে নিজ দলীয় প্রার্থী পেয়ে উচ্ছ্বসিত তাঁরা। নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে একজোট হয়ে মাঠে নেমেছেন তাঁরা। এমনকি এ আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়া চার প্রার্থীও নির্বাচন থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে নৌকার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য এ এইচ এম মাসুদ ওরফে দুলাল, সাবেক সংসদ সদস্য মোবারক হোসেনের ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য এরফান হোসেন ওরফে দীপ, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শামসুল ইসলাম ভূঁইয়ার ছেলে মারুফুল ইসলাম এবং কায়সার হাসনাতের স্ত্রী রুবিয়া আক্তার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে লিয়াকত হোসেন খোকা ছাড় দেয় নৌকার মনোনীত প্রার্থী মরহুম মোশারফ হোসেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে লিয়াকত হোসেন খোকাকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়। পরবর্তীতে টানা দ্বিতীয় বারের মত সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় আসনটিতে জাতীয় পার্টির শক্তিশালী দূর্গ গড়ে উঠতে থাকে।
পাশাপাশি আসনটি জাতীয় পার্টির আসন হিসেবেও পরিচিতি লাভ করতে থাকে। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এসে পুরো দৃশ্যপটই বদলে গিয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে। কারণ টানা ১০ বছর পর আসনটিতে নৌকার মনোনীত প্রার্থী নির্বাচিত করেছে আওয়ামীলীগ। তারপরও নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে আসন ভাগাভাগির একটি শঙ্কা ছিল।কিন্তু শেষতক আসন ভাগাভাগি না হওয়ার কারণে নৌকা-লাঙ্গল উভয় দলের প্রার্থীরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়ে যায়। যার কারণে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী কায়সার হাসনাত এবং লিয়াকত হোসেন খোকার মধ্যে ভোটের মাঠে হাড্ডহাড্ডি লড়াইয়ের বাতাস বইছে।
তবে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ -৩ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আল কায়সারকে এক লক্ষ্য ভোটের ব্যবধানে জয়ী করার আশ্বাস দেন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ।
অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ -৩ আসন থেকে জাতীয় পার্টির দুই বারের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির দলীয় প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার লক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা ৷
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রচারণায় জমে উঠেছে আশপাশের এলাকার চায়ের দোকান থেকে শুরু করে প্রতিটি মহল্লা। এ সময় আবদুল্লাহ আল কায়সারের সমর্থনে ‘নৌকা’ ‘নৌকা’ স্লোগানে নির্বাচনের প্রচারণা চালান উপস্থিত নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
কাগজে কলমে ৮ জন প্রার্থী থাকলে ও আওয়ামী লীগের আবদুল্লাহ আল কায়সার , জাতীয় পার্টির লিয়াকত হোসেন খোকাকে ছাড়া অন্য ৬ প্রার্থীকে ভোটের মাঠে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। সরেজমিনে ঘুরে জাতীয় পার্টি ও নৌকার পোষ্টার,জনসংযোগ, উঠান বেঠক পথসভা দেখা গেলেও অন্য ৬ প্রার্থীর কোন নির্বাচনী কার্যক্রম দেখা যায়নি।
নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে মোট ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের আবদুল্লাহ আল কায়সার (নৌকা প্রতীক), জাতীয় পার্টির লিয়াকত হোসেন খোকা (লাঙল প্রতীক),বিএনএমের এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান (নোঙর প্রতীক), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন (একতারা প্রতীক), বিকল্প ধারা বাংলাদেশের নারায়ণ দাস (কুলা প্রতীক),বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মো. মজিবুর রহমান মানিক (ফুলের মালা প্রতীক),বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. আরিফ (ছড়ি প্রতীক) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এ, এইচ, এম, মাসুদ (ঈগল প্রতীক)৷এদের মধ্যে এ এইচ এম মাসুদ নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। #