ভয়ংকর ব্লাকমেইলার চক্র জি কে রাসেল ও শরীফুল বাহিনী
বন্দর প্রতিবেদকঃ বন্দরে সংঘবদ্ধ হয়ে উঠেছে ব্ল্যাকমেইলার চক্র। ভয়ংকর এ চক্রের মূল হোতা জি কে রাসেল ওরফে নোয়াখাইল্যা রাসেল ও শরীফুল ইসলাম ওরফে কানা শরীফুল। জি কে রাসেল নোয়াখালি জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। নিজের নাম পরিচয় গোপন রেখে দীর্ঘ দিন ধরেই বন্দর এলাকায় বসবাস করে আসছে। এক সময় মাল্টিলেভেল মার্কেটিং ব্যবসা ডেসটিনি করে অগণিত মানুষের টাকা আত্নসাৎ করে সে।
ডেসটিনি বন্ধ হওয়ার পর নতুন ফাঁদ পাতে। সেটা হচ্ছে ব্ল্যাকমেইলিং। খারাপ নারীদের দিয়ে তারা বিভিন্ন জনকে সেই ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা আদায় করে নিচ্ছে। ইদানীং কয়েক বছর ধরে তাদের ব্ল্যাকমেইলিং বানিজ্য টিকিয়ে রাখতে জিকে রাসেল‘‘শিক্ষা তথ্য’’ ও ‘‘আজকের বাংলাদেশ’’নামক দু’টি রেজিষ্ট্রেশনবিহীন অনলাইন খুলে বসে। শিক্ষা তথ্য অনলাইনটি নামে শিক্ষা তথ্য কিন্তু তাতে শিক্ষা সংক্রান্ত বা শিক্ষামূলক কোন সংবাদই আপলোড করা হয়না। অনলাইন দিয়েও জি কে রাসেল বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে মোটা অংক হাতিয়ে নেয়। তার ভূয়া এই অনলাইনে বেশ কয়েকজন ছেলে-মেয়েকে যুক্ত করে প্রতিদিন নিউজ প্রতি টাকা আদায় করে নিচ্ছে। কিছুদিন আগে জি কে রাসেল তার নামধারী অনলাইনের প্রতিনিধি পরিচয়দানকারী নারী কর্মীসহ ঢাকার একটি হোটেলে জনতা কর্তৃক আটক হয।
পরে সেখানকার লোকজন তাদেরকে নারী কর্মীর নিজ এলাকা বন্দর কলাবাগ এলাকার পঞ্চায়েতের লোকজনের মধ্যস্থতায় বিয়ে করার শর্তে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। অন্যদিকে এক সময়কার ছাত্রশিবিরের কর্মী শরীফুল তৎকালীন চারদলীয় জোট হওয়ার সুবাদে বন্দর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মহিউদ্দিন শিশিরের সঙ্গে ঘুরা ফেরা করতো। মহিউদ্দিন শিশিরের ভাই আনিসের সঙ্গে বিরোধ হওয়ায় সে শিশিরের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যায়। এরপর গ্যাস সংযোগকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হয় আনিস। আনিস হত্যাকান্ডের পর শরীফুল পূণরায় শিশিরের সঙ্গে মিলিত হলে আসামী পক্ষের লোকজন শরীফুলের বিরুদ্ধে তাদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের মামলায় আসামী বানায়। বিভিন্ন লোকজনের সহযোগিতায় শরীফুল ওই মামলা থেকে রেহাই পায়। পরবর্তীতে শরীফুল ঢুকে পড়ে নামধারী সাংবাদিকতায়। কিছুদিন নারায়ণগঞ্জের অনলাইনে কাজ করার পর পরিচিতি পেয়ে এক পর্যায়ে নিজেই জামায়াতে ইসলামীর সংগ্রাম পত্রিকার সাথে মিল রেখে খুলে বসেন আমাদের সংগ্রাম নামে একটি রেজিষ্ট্রেশনবিহীন অনলাইন। ওই অনলাইনে প্রতিদিন নিউজ আপলোড না হলেও কোথাও কোন ধান্ধায় ব্যর্থ হলে অনলাইনে ঠিকই নিউজ আপলোড করা হয়। এরই মধ্যে নিজেদের দল ভারী করতে সিটি চাঁদা কালেক্টার ডালিম সিকদার,ছাত্রদলের ক্যাডার আবু সুফিয়ানসহ আরো বেশ কয়েকজন ভূয়া গণমাধ্যমকর্মীদেরকে নিয়ে বন্দর উপজেলা প্রেসক্লাব নাম দিয়ে বন্দর ১নং খেয়াঘাট এলাকার যুবরাজ মার্কেটে একটি দোকান খুলে বসে। সেখানে প্রতিদিনই কোন না কোন ব্যক্তিকে এনে ব্ল্যাকমেইল নাটকের সমাপ্তি ঘটনায়। এইভাবে দিনের পর দিন জি কে রাসেল ও শরীফুল বাহিনীর ব্ল্যাকমেইল বানিজ্য অব্যাহত থাকায় সাধারণ মানুষ নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। নারায়ণগঞ্জের সর্বালোচিত ব্ল্যাকমেইলার বাহিনী গালপোড়া রঞ্জু বাহিনী এক সময় ব্ল্যাকমেইলিং বানিজ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে আইনের মাধ্যমে তাদের অস্বিত্ব বিলীন হলেও জি কে রাসেল ও শরীফুল বাহিনী তাদের চেয়েও ভয়ংকর পর্যায়ে উপণীত হচ্ছে। বন্দরের সর্বস্তরের জন সাধারণ ভয়াল এই বাহিনীর অপতৎপরতার অবসান পেতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ র্যাবের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে।
উল্লেখ্য,গত ১০ জানুয়ারী বুধবার দুপুরে ব্ল্যাকমেইলার জি কে রাসেল ও শরীফুল গং সোনাকান্দা এলাকার বহু বিয়ের কণে মিলি বেগমের সঙ্গে কল্যান্দী নয়ানগর এলাকার বরকত মিয়ার বাড়িতে হানা দেয়। সেখানে গিয়ে বরকতউল্লাহর প্রবাসী পুত্র ফয়সালের সঙ্গে মিলি বেগমের ভূয়া সম্পর্কের ঘটনা সাজিয়ে তাদেরকে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের চেষ্টা চালায়। তারা বিষয়টি নিস্পত্তি করার নাম করে ফয়সালের পরিবারকে টাকা দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে তাদের নাম-পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদেরকে নাম সর্বস্ব অনলাইন মিডিয়ার সংবাদকর্মী বলে নিজেদেরকে পরিচয় দান করে। পরে পরিস্থিতি বেগতি বুঝে সটকে পড়ে। ঘটনাটি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।#