দুর্নীতির অভিযোগে বিআইডব্লিউটিসি ডক-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
বন্দর প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অসদাচরণের অভিযোগে বন্দরে ধামগড় ইস্পাহানী এলাকায় অবস্থিত বিআইডব্লিউটিসি ডকইয়ার্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল হামিদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেছেন অত্র ডকইয়ার্ড-২ এর আংশিক শ্রমিক কর্মচারীরা। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় ডকইয়ার্ড-২ এর মূল প্রবেশ গেইটের সম্মুখে তারা এ বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন।
তাছাড়া সরকার ও নির্বাচন বিরোধী কুরূচিপূর্ণ মন্তব্য ও শ্রমিক-কর্মচারীদের সাথে অসদাচরণ করার অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চলতি মাসের ১০ তারিখে ৩১ জন শ্রমিকের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি অভিযোগ বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিক কর্মচারীরা বলেন, ‘ডকইয়ার্ডের কাজের ধীরগতি, শ্রমিক-কর্মচারীদের সাথে অসদাচরণ এবং কৃষিবান্ধব সরকারের নীতিকে অগ্রাহ্য করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য ডকইয়ার্ডের অভ্যন্তরে অসংখ্য ঔষধী ও ফলজ গাছ কেটে ফেলার কারণ বিনয়ের সহিত আলোচনা করতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী আমাদের উপর ক্ষীপ্ত হন। তিনি শ্রমিক-কর্মচারীদের সাথে প্রতিনিয়ত খারাপ ব্যবহার সহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে থাকেন। তিনি বিএনপি ও জামায়াত পন্থী কিছু শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের সুবিধা দেয়ার ফলে ডকইয়ার্ডের কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে ও কাজের ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তার কারণে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও ফেরী ‘শাহ-মখদুম’ মেরামত সম্পন্ন করে ট্রাফিকে সংযুক্ত হয়নি। প্রাক্কলনের অতিরিক্ত এম.এস-প্লেট সহ অন্যান্য মালামাল ব্যবহার করে কর্পোরেশনের বিপুল অংকের আর্থিক ক্ষতি সাধন করেছেন। তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনের কারণে কিছুদিন পূর্বে শ্রমিক-কর্মচারী কর্তৃক বিক্ষোভ মিছিল সংঘটিত হয় যা বন্ধের কোন প্রকার উদ্যোগ তিনি গ্রহণ করেননি। পরবর্তীতে দ্বি-মুখী নীতি অবলম্বন করে তার পছন্দের বিএনপি-জামায়াত পন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের বেতন কর্তন না করে সরকার পন্থী শ্রমিক-কর্মচারীদের ৪ দিনের বেতন কর্তন করেন, যার ফলে ডকইয়ার্ডের শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। উক্ত কর্মকর্তা গত বছরের ২ আগস্ট রাত আনুমানিক ২টা সময় ফেরী বি.এস. রুহুল আমীন-এর শ্যাফট মেরামত করে পাটুরিয়া প্রেরণের সময় তার সাথে ৪-৫ বস্তা বিভিন্ন প্রকার দামী মালামাল বাইরে পাচার করেন। তিনি সহ-ব্যবস্থাপক (হিসাব) স্বপন মামুদ এর সাথে যোগসাজশ করে মোস্তফা নামে একজন ঠিকা শ্রমিকের নাম দিয়ে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা বিল উত্তোলন করে তিনি এবং স্বপন মামুদ উভয়ের নিজেদের সকাল ও দুপুরের খাবার হিসেবে উক্ত টাকা খরচ করে থাকেন। তিনি বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় শোক দিবস সহ বিভিন্ন দিবসে ডকইয়ার্ড অফিসে কোন প্রকার অনুষ্ঠান করেন না বরং অনুষ্ঠানগুলো সম্পর্কে নানা প্রকার কুরূচিপূর্ণ মন্তব্য করে থাকেন। এ বিষয়ে আমরা বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেছি এবং শুনেছি এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। আমরা অভিযোগ করেছি বিধায় বর্তমানে আমাদের সাথে তিনি খারাপ ব্যবহার করছেন এবং আমাদেরকে চাকুরিচ্যুত করার হুমকি দেয়া হচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল হামিদকে তাৎক্ষণিক এ ডকইয়ার্ড থেকে প্রত্যাহার করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জোরালো দাবী জানাচ্ছি’।
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল হামিদ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি শ্রমিকদের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করার চেষ্টা করি এবং তাদেরকে নিয়মের মধ্যে আনার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছি বিধায় তারা আমার প্রতি ক্ষুদ্ধ। একটি পক্ষ ইন্ধন দিয়ে শ্রমিকদেরকে আমার বিরুদ্ধে খেপিয়ে তুলেছে, ফলে অত্র ডকইয়ার্ডের কর্মপরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। আমিও চাই বিষয়টি তদন্তপূর্বক খতিয়ে দেখা হউক’।#