রূপগঞ্জে কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে অবৈধ ইট ভাটায় | প্রশাসনের অভিযানের দাবি
নিজাম উদ্দিন আহমেদ- রূপগঞ্জ প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মাসাবো, তেতলাবো, বরপা, কর্ণগোপ, সাঁওঘাট, গোলাকান্দাইল, আওখাবো, বেলদি, দেবই, কামালকাঠি, আতলাপুর, ভোলাবো, চারিতাল্লুক, বিরাবো, কাঞ্চন, পিতলগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার কৃষি জমির মাটি অবাধে যাচ্ছে অবৈধ ইটভাটায় ।ইটভাটার নির্গত কালো ধোঁয়ায় দূষিত হয়ে পড়ছে আশপাশের পরিবেশ। বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে প্রাণী, গাছপালা ও জীবজন্তু। এ সকল এলাকার কৃষি জমির টপসয়েল হারিয়ে কৃষকরা এখন বোবা কান্নায় কাঁদছেন।সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কোন কোন ইটভাটায় চলছে কাঠ পোড়ানো। ইটভাটার পার্শ্ববর্তী সড়কের পাশের গাছের পাতায় পাতায় ধূলোবালির স্তুপ। বাতাসে মিশছে ইটভাটার কালো ধোঁয়া। ইট বহনকারী অবৈধ ট্রলি চলাচলে স্থানীয় সড়কগুলো খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। তাতে যানবাহন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আম, জাম, কাঁঠাল ও নারকেল গাছে ফলন কমে গেছে। আম গাছের মুকুল কালো হয়ে ঝরে পড়ছে। সবুজের চাদর মোড়ানো গ্রাম এখন বিবর্র্ণ হয়ে পড়েছে। ফসলে ভরা ছিল মাঠ। চারিদিকে ছিল সবুজের সমারোহ। এখন আর সেই রূপ এখানে নেই।
শুধুই স্মৃতি।খবর নিয়ে জানা যায় সমাজের একটি প্রভাবশালী মহল সকল আইনকে উপেক্ষা করে জনবসতি এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে তুলেছে প্রায় শতাধিক অবৈধ ইটভাটা।বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা রাতের আঁধারে বেকু দিয়ে কৃষি জমি গভীর ভাবে খনন করে মাটি কেটে ইটভাটাগুলোতে সরবরাহ করছে। এতে করে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। এ সকল ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় হাচিঁ-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার শিশু কিশোর আবাল বৃদ্ধ নিয়ে সকল মানুষ। অবৈধ ইটভাটার কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকার সকল মানুষ, আর এদিকে সরকার হারাচ্ছে বছরে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। অন্যদিকে মারাত্বক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। হুমকির মুখে পড়ছে আগামীর ভবিষ্যৎ।দাউদপুর ইউনিয়নের রোহিলা এলাকার কৃষক ইকবাল বলেন, আমি প্রতিবছর ২-৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করি। কিন্ত এবছর পাশের জমি বেকু দিয়ে গভীর খনন করে মাটি কাটায় আমার জমিসহ পাশের জমি সৃষ্ট গর্তে ভেঙ্গে পড়ছে। এবছর ধান চাষ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।ভোলাবো ইউনিয়নের আতলাপুর এলাকার কৃষক আব্দুল বলেন, মাটি খেকোরা বেকু দিয়ে কৃষি জমির মাটি কেটে নিচ্ছে ইটভাটায়। মাটি কাটায় বাধাঁ দিলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হামলা মামলা করা হয়। সেচ প্রকল্পের খালে বাধঁ দিয়ে তাদের ব্যবহৃত পরিবহন চলাচল করে। ফলে পানি সংকটে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। ভূমি দস্যদের মাটি কাটার সংবাদ পেয়ে রুপগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের কয়েকজন সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে নেড়ারা বলেন আপনারা কত বড় সাংবাদিক আপনাদের থেকে অনেক বড় বড় সাংবাদিক এখানে এসেছে কেউ কিছু করতে পারেনি আপনারাও পারবেন না আপনারা ভালাই ভালাই কেটে পড়েন। ভূমিদস্যুরা অনেকেই সরকার দলীয় নেতাদের সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা প্রকাশ করে বলেন এটা আমাদের যৌথ প্রকল্প এখান থেকে মাটি কাটার বাঁধা দিতে পারবে না কেউ।
আমাদের হাত অনেক বড়। কাঞ্চন পৌরসভার বিরাবো এলাকার সাইফুর রহমান ও সফিকুর রহমান বলেন, ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় এলাকার সবধরণের ফসল ও গাছপালা ঝলসে যাচ্ছে। বৃষ্টি হলে কাদা আর শুকনো মৌসুমে ধুলোবালির জন্য রাস্তায় চলাচল করা যায় না। অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ও কৃষি জমি থেকে মাটিকাটা বন্ধে আমরা শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করবো এবং সকল অবৈধ ইট ভাটা গুলোতে কাজ বন্ধ করে দিব। তবে এর আগেও বেশ কয়েকটি ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা আদায় করা হয়েছিল। এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে ইট ভাটায় সরবরাহ করা ও ইটভাটার কালো ধোঁয়া দিয়ে পরিবেশ দূষণকারী অবৈধ ইটভাটার সঙ্গে কোন আপোষ নেই। #