রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সাবেক সেনা প্রধান কেএম সফিউল্লাহ (বীর উত্তম) এর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত


নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ ৩ নম্বর সেক্টর কমান্ডার ও ‘এস’ ফোর্সের সর্বাধিনায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সাবেক সেনা প্রধান ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল কেএম সফিউল্লাহ (বীর উত্তম) এর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধের ৩ নম্বর সেক্টর কমান্ডার ও ও ‘এস’ ফোর্সের সর্বাধিনায়ক স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সেনা প্রধান, সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহ ( বীর উত্তম) ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
মৃত্যুকালে তিনি ১ ছেলে ৩ মেয়ে ও স্ত্রী সহ অসংখ্যগুনগ্রাহী রেখে গেছেন।রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়। আজ বাদ যোহর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ কাজী আবদুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে তার প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে দেশের এই বীর সন্তান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার (বীর উত্তম) কে এম সফিউল্লাহ’র মরদেহ রাষ্টীয় মর্যাদা গার্ড অব অর্নার সম্মান জানানো হয় এবং এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।বাদ আসর সেনাবাহিনীর কেন্দ্রীয় মসজিদে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।তার প্রথম জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, কে এম সফিউল্লাহ ( বীর উত্তম) এর একমাত্র ছেলে কাজী ওয়াকার আহমেদ, বিএবপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু, মেজর বাবুল রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সভাপতি এ্যাডভোকেট মাহাফুজুর রহমান হুমায়ন,সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন সহ সর্বস্তরের মানুষ জানাজায় অংশ নেন।কে এম সফিউল্লাহর ব্যক্তিগত সহকারী জিয়ার রহমান মনি জানায়, এই সফিউল্লাহ দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, থাইরয়েডে জটিলতা, ফ্যাটি লিভার, ডিমেনশিয়াসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন ।১৯৩৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জন্ম গ্রহণ করেন কে এম সফিউল্লাহ।১৯৭১ সালে সফিউল্লাহ ছিলেন জয়দেবপুরে দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের দ্বিতীয় প্রধান। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে সফিউল্লাহ ছিলেন ৩ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার। পরে তিনটি নিয়মিত আর্মি ব্রিগেড (ফোর্স নামে পরিচিত) গঠিত হলে ‘এস’ ফোর্সের নেতৃত্বে আসেন সফিউল্লাহ।
১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেস্বর মেজর জেনারেল কেএম সফিউল্লাহ (বীর উত্তম) তার বাহিনী এবং মিত্র বাহিনী নিয়ে রূপগঞ্জের মাটিতে পা রাখেন।স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার আব্দুল জাব্বার খান পিনু ও তার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলার কড়াইতলায় বিজয়ের পতাকা তুলে রূপগঞ্জকে শত্রুমুক্ত করেন।মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ‘বীর উত্তম’ খেতাব পান।দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইডেন, ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ২৪শে আগস্ট পর্যন্ত শফিউল্লাহ সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ১৬ বছর তিনি বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৫ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।#