< ফলোআপ > | মাত্র ৩০ মিনিটের কিলিং মিশনে মেধাবী ছাত্র ফারদিনকে হত্যা
রূপগঞ্জ প্রতিবেদকঃ তদন্তকারী গোয়েন্দা সংস্থার ধারনা ৩০ মিনিটের কিলিং মিশনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশকে (২৩) হত্যা করা হয়েছিল। গত (৪ নভেম্বর) নিখোঁজ হয় বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন। পরদিন রাজধানীর রামপুরা থানায় নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা কাজী নূরউদ্দিন। ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। ৯ নভেম্বর রাতে বান্ধবী বুশরাসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে খুন করে লাশ গুম করার অভিযোগে রামপুরা থানায় মামলা করেন ফারদিনের বাবা। হত্যাকারীদের খুজতে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন, শুরু হয় তদন্ত। মাঠে নামে প্রশাসনে বিভন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। মামলায় ফারদিনের বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে গ্রেফতার করে ডিবি। গোয়েন্দা সংস্থা বুশরার সঙ্গে ফারদিনের দুই বছরের চ্যাটিং হিস্ট্রি বের করলেও সন্দেহজনক কোন তথ্য পাইনি । তাদের বেশির ভাগ আলোচনা ছিল পড়ালেখা আর ডিবেটিং বিষয়ক। এমনকি তাদের মধ্যে কোনো প্রেমের সম্পর্ক থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।তদন্তকারীরা তিনটা প্রশ্নে তদন্ত করছেন, ফারদিন চনপাড়া বস্তিতে কীভাবে গেলেন, তাকে সেখানে কারা নিলো, হত্যার উদ্দেশ্য কি।এর ভিতর হত্যার মোড় অন্যদিকে ঘুরাতে বিভিন্ন মাধ্যম নিহত ফারদিনকে মাদকসেবী বলতে শুরু করে । এতে তিব্র প্রতিবাদ করে নিহতর পরিবার ও সহপাঠীরা। তারা বলেন, প্রচন্ড মেধাবী ছিলেন বুয়েট ছাত্র ফারদিন। সে কোনদিন কোন অবস্থায় মাদকের সাথে জড়িত ছিল না।ফারদিন হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্তকারী সংস্থার এক কর্মকর্তা সন্দেহ করছেন চনপাড়া বস্তির ৪ জন গ্যাংস্টার,মাদক সম্রাজ্ঞী ও শীর্ষ সন্ত্রাসীকে। তারা হলো রায়হান, নূর জামাল, মাল্টা রনি, মুজাহিদ এবং মনু। চনপাড়া বস্তির অপরাধ জগৎ মাদক কারবার ঘিরে। অপরাধীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে অপহরণ করে এ বস্তি এলাকায় নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে। তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা চনপাড়া বস্তিতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। সেখানেই হত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারনা করছি। তবে শুধু ধারনা নিশ্চিত না। কারণ ফারদিন রামপুরা থেকে কোথায় গেছেন, তার কোনো সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা যায়নি। জানা যায়, বুয়েটের একটি প্রজেক্ট রয়েছে রূপগঞ্জ এলাকায়। এর আগেও একাডেমিক সার্ভে জরিপে ফারদিন তিনবার রূপগঞ্জের চনপাড়া বস্তির আশপাশে গিয়েছিলেন। তাহলে কি বুয়েট প্রজেক্টকে কেন্দ্র করে ফারদিনের সাথে চনপাড়া বস্তি সন্ত্রাসীদের সাথে কোন ঝামেলা ছিল এমন প্রশ্ন থেকে যায়। ফারদিনের মৃত্যদেহ উদ্ধার হয় ৭ নভেম্বর আর ১১ নভেম্বর র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে চনপাড়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী সিটি শাহীন(৩৫)। যার নামে হত্যা মামলাসহ ২৩ টি মামলা রয়েছে। তবে কি ফারদিন হত্যার সাথে সিটি শাহিন জড়িত ছিল।ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমে বলেন, বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিনকে হয়ত রাজধানীর কোনো এক জায়াগায় হত্যা করা হয়েছে। পরে খুনিরা তাদের বাচাতে রূপগঞ্জ ধলেশ্বরী নদীতে ফেলে দেয়। তিনি আরো বলেন, ফারদিন যেখানে যেখানে গিয়েছিলেন, আমরা বিভিন্ন টেকনিক্যাল মাধ্যম ব্যবহার করে সেসব স্থান খুঁজে বের করেছি।ফারদিন হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, ৪ নভেম্বর রামপুরা থেকে চনপাড়া বস্তিতে যাওয়ার আগে মোবাইল ফোনে ছয়জনের সঙ্গে কথা বলেন ফারদিন। তার সর্বশেষ কথা হয় সিনিয়র শিক্ষার্থী শীর্ষ সংশপ্তকের সঙ্গে। শীর্ষর সঙ্গে প্রতিবারই ১০ থেকে ২০ সেকেন্ডের কথা হয় ফারদিনের। ভয়েস রেকর্ড সংগ্রহের পর দেখা গেছে, ডিবেটিং নিয়ে তাদের মধ্যে কথা হয়। যেহেতু ফারদিন ছিলেন একজন তর্ক প্রতিযোগী (ডিবেটিং)।গত রবিবার (১৩ নভেম্বর) ডিবি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রাজীব আল মাসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, এখনো ফারদিন হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ আমরা সংগ্রহ করতে পারিনি। খুনিদের ধরতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। #