বাস চালক ও হেল্পারের যোগসাজশে পাচার হয় ইয়াবা
কক্সবাজার থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছেড়ে যাওয়া পরিবহনের বাসগুলোতে চালক এবং বাস সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে ইয়াবা পাচার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কক্সবাজার বাস টার্মিনাল ও কলাতলী মোড় থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশ্যে যাত্রীবাহী বাস ছাড়ে। এই দুই জায়গায় মানুষের ভিড় বেশি হওয়ায় ইয়াবা বাহকরা পুলিশ প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে যায়। তারা অভিনব কৌশল অবলম্বন করে বাসে লুকিয়ে ইয়াবা পাচার করে। এতে লিপ্ত থাকে বাসের চালক ও হেল্পারসহ সংশ্লিষ্টরা।বাসটার্মিনাল এলাকায় বাস সংশ্লিষ্ট জায়েদ উল্লাহ নামের একজন বলেন, ‘দূরপাল্লার কিছু কিছু বাসে এমন সিস্টেম আছে যেখানে মাদক রাখলে সঠিক তথ্য না পেলে প্রশাসনও তল্লাশি করে খুঁজে পাবে না। বাসের চালক ও হেল্পাররা এমন সিস্টেম করে রেখেছে।’কলাতলীর বাস সংশ্লিষ্ট শাহাব উদ্দিন নামের আরেকজন বলেন, ‘দিনরাত বাসে করে ইয়াবা পাচার হয়। কিছু কিছু বাসের তথ্য প্রশাসনের কাছে পৌঁছালে তল্লাশি-অভিযান হয়। বাকিগুলো টেরও পায় না প্রশাসন।’তিনি আরও বলেন, ‘বাসে ইয়াবা পাচারের সঙ্গে খোদ বাস মালিকরা জড়িত। না হয় চালক হেল্পাররা এমন সাহস কোনোদিন পেত না।’এদিকে বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাতে কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া সেন্টমার্টিন হেরিটেজ পরিবহনের স্লিপার কোচ থেকে ৮ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। রামু উপজেলার পানির ছড়া এলাকায় জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলমের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।এসময় বাস চালক নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ বরপা এলাকার আলীর ছেলে শুকুর আলী (৪৫) ও তার সহযোগী কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বরইতলী এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে রফিককে (৩০) আটক করে ডিবি।ডিবির ওসি সাইফুল আলম বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে নজরদারি করে অবশেষে সেন্টমার্টিন হেরিটেজ পরিবহনের বাসের চালকের হেফাজতে থাকা ৮ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এসময় তাকে এবং ইয়াবা পরিবহনের সঙ্গে জড়িত তার সহযোগীকেও আটক করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত ইয়াবার আনুমানিক ২৪ লাখ টাকা। এ ঘটনায় রামু সদর মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সবসময় নজর রাখার চেষ্টা করছি। বিশেষ করে মাদক চালানে কোন কোন বাস জড়িত তা নিশ্চিতের চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমাদের কাছে তথ্য আসতে শুরু করেছে। আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি আরো বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাস বা যে কোনো পরিবহন বা অন্য কোনো উপায়ে যাতে মাদক পাচার না হতে পারে তার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মাদক পাচারকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘দূরপাল্লার যে বাসগুলোর বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ পাচ্ছি আমরা সাথে সাথে অভিযান পরিচালনা করছি। এক্ষেত্রে আমাদের গোয়েন্দা নজরদারিও বৃদ্ধি করা রয়েছে। অভিযোগ বা তথ্যের ভিত্তিতে কোনো পরিবহণ কিংবা যাত্রীবাহী বাস থেকে মাদক পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো। কেউ ছাড় পাবে না। এ ব্যাপারে আমরা যেন তথ্য পাই সেজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’