শিরোনাম
চাষাড়া শহীদ মিনারে কিশোর গ্যাংয়ের মারধরের শিকার এক যুবতী !
নারায়ণগঞ্জের খবর ডেস্কঃ শহরের প্রান কেন্দ্রে অবস্থিত ৫২’র ভাষা আন্দোলনে শহীদদের সম্মানে তৈরী শহীদ মিনারটি ক্রমেই তার সৌন্দয্য হারিয়ে যাচ্ছে। শহীদ মিনারের পাশে বিভিন্ন প্রকার চায়ের স্বাদ নিতে সাধারন মানুষের কাছে চাষাড়া শহীদ মিনারটি যেন বর্তমানে কিশোরগ্যাং এর আড্ডাস্থল হিসেবে পরিনত হয়েছে। প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-খাটো ঘটনা যা থেকে বড় ধরনের মারামারিতেও রুপান্তরিত হচ্ছে। আর সেখানে এরুপ অপরাধগুলো যেন প্রশাসনসহ কারোই নজরে আসছে আর হচ্ছেনা কোন প্রতিকার।
সরেজমিনে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় দেখা গেলো এক দল কিশোরগ্যাং প্রকাশ্যে এক পতিতাকে মারধর করার মত দৃশ্য। যেন সেখানে উপস্থিত প্রতিটি মানুষকে বেদনা দিলেও বেদনাগ্রস্থ করতে পারেনি সেখানে ডিউটিরত সদর মডেল থানার তিনজন পুলিশকে।
কিশোর গ্যাংয়ের মারধরের শিকার পতিতা নওরিন (ছদ্মনাম) সাংবাদিকদের জানান, গতকাল শুক্রবার রাত প্রায় ১০টার দিকে অপু নামে এক কিশোর সঙ্গীয়রাসহ ১৮ বয়সী এক মেয়েকে শহীদ মিনার থেকে অন্যত্রস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য টানা-হেচড়া করছে। এতে আমি বাধা প্রদান করলে অপুগংরা সেই মেয়েটিকে নিয়ে যেতে পারেনি। তাতেই ওরা আমার উপর ক্ষ্যাপা। এর সুত্র ধরেই আজ আমাকে দেখতে পেয়ে লাথি ও কিলঘুষি মারতে থাকে এবং আমাকে আর শহীদ মিনারে দেখলে আরও মারধর করবে বলে হুমকী দেয়। নওরিন আরও বলেন, আমি তো নিজের ইজ্জত নষ্ট করেছি অভাবের তাড়নায় তাই বলে কি আরেকটি মেয়ের ইজ্জত রক্ষা করাটা আমার অপরাধ । কে এই অপু জানতে চাইলে নওরিন বলেন, এখানকার নেতা সৈয়দ রনির বন্ধুর ছোট ভাই হচ্ছেন অপু। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অব্দি শহীদ মিনারে তার দলবল নিয়ে বিভিন্ন মেয়েদেরকে উক্ত্যক্ত করে এবং রাত হলেই ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন বয়সী মেয়েদেরকে তুলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালায় কিশোর গ্যাং লিডার অপু ও তার বাহিনীর সদস্যরা।
শহীদ মিনারের আশপাশে থাকা অনেক দোকানী বলেন, শহীদ মিনারের আগের অবস্থা এখন আর নেই। শুধু অপু নয় এরকম অনেক অপু এখন শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম চালাচ্ছে নিয়মিত। আমরা কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাইনা। দিনের বেলায় বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ছাত্রীদেরকে বিরক্ত করাটা ওদের নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়ে দাড়িয়েছে। আবার সন্ধ্যা হলে ওদের রুপ আরও ভয়ংকর হতে থাকে। পরিবারের সাথে আসা বিভিন্ন বয়সী মেয়েদেরকে বিরক্তিকর কটুক্তি করাসহ গায়ের ওড়না ফেলে দেয়া,মেয়েদের গায়ের উপর পড়াসহ আরও কতকিছু কাহিনীর করে যা না দেখলে বিশ^াস যোগ্য নয়। মেয়েদের সাথে আসা অভিভাবকরা যেন সে সময়ে নিরুপায় হওয়া ছাড়া অন্যকিছুই করার থাকেনা।
শহীদ মিনারে ঘুরতে আসা মধ্য বয়সী এক নারী বলেন, আমরা কোথায় বসবাস করছি জানিনা। তবে এটা কোন সভ্য দেশে এধরনের কাজ হতে পারেনা যে প্রকাশ্যে এভাবে একটি মেয়েকে লঅথি-ঘুষি মারছে। নির্যাতিতা মেয়েটি পুলিশকে বলেও কোন বিচার পেলোনা এটা কিভাবে সম্ভব ? তাহলে আমরা অসভ্য দুনিয়ায় বসবাস করছি।
শহীদ মিনারের পরিবেশ রক্ষায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং এর অভ্যন্তরে কিশোরগ্যাং ও ভাসমান পতিতারোধে জেলা পুলিশকে আরো কঠোর হওয়ার আহবান জানান সেখানে ঘুরতে আসা সাধারন মানুষ। #