শিরোনাম
বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে | স্কুলছাত্রকে কুপিয়ে বীরদর্পে সন্ত্রাসীরা
নারায়ণগঞ্জের খবর ডেস্কঃ ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর সাজাহান রোলিং মিলস এলাকায় তুচ্ছ ঘটনায় জুয়ারী রাজন-মোহনগংদের হামলায় ৯ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সিয়ামকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত মামলা নেয়নি থানা পুলিশ। অপরদিকে স্কুল শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে আহত করে উল্টো থানায় মিথ্যা একটি অভিযোগ করে উদোড় পিন্ডি ভুদোড় ঘারে চাপানোর আয়োজন করেছে সুচতুর রাজন-মোহনগং। ছেলে সিয়ামকে আহতের বিষয়ে সুবিচার প্রার্থী বাবা মো.মাইনুদ্দিন একাধিকবার পুলিশের স্বরনাপন্ন হলেও তা যেন আমলে নিচ্ছেনা থানা পুলিশ। তবে পুলিশ রাজনগংদের খুজে না পেলেও থানার পাশেই ঘুরে বেড়ায় রাজন এমনটাই অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়,মাইনুদ্দিনের ছেলে সিয়াম (১৯) ফতুল্লা পাইলট স্কুলে ৯ম শ্রেণীতে লেখাপাড়া করে। ১৫ মার্চ সন্ধ্যা পৌনে ৭ টায় আমার ছেলে সিয়াম আমার বর্ণিত ঠিকানার বাসা হইতে বাহির হইয়া দাপা ইদ্রাকপুর শাহজাহান রোলিং মিলস্ এ যাওয়ার পথিমধ্যে ফতুল্লা থানাধীন দাপা ইদ্রাকপুর শাহজাহার রোলিং মিলস্ সাকিনস্থ আর্মি মার্কেটের সামনে পৌছাইলে আমার ছেলের বন্ধু মোঃ তৌফিককে ইদ্রাকপুর এলাকার মৃত.আক্কাস আলীর ছেলে রাজন,সুমন,মোহন,বাবু, একই এলাকার সজল,রুবেল মাহমুদ, লালপুর এলাকার মামুন, কোতালেরবাগ এলাকার আমির হোসেন অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জন সন্ত্রাসী ও খারাপ প্রকৃতির লোক মারপিট করিতে থাকা কালে আমার ছেলে সিয়াম প্রতিবাদ করায় বিবাদীগন এক জোটবদ্ধ হইয়া আমার ছেলেকে অতর্কিত ভাবে আক্রমন করিয়া এলোপাথারী মারপিট করিতে থাকে।
এ সময় রাজনের হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে স্কুল ছাত্র সিয়ামকে মাথার সামনে কোপ মারিয়া গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। সুমনের হাতে থাকা ছোরা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে সিয়ামের মাথার পিছনে কোপ মারিয়া গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। মোহনের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে সিয়ামকে মুখে আঘাত করিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এক পর্যায়ে সিয়াম আঘাত প্রাপ্ত হয়ে রাস্তার উপর লুটাইয়া পড়িলে অভিযোগের অন্যান্য বিবাদীরা সিয়ামকে এলোপাথারী কিল, ঘুষি, লাথি মারিয়া ও পা দ্বারা পাড়াইয়া আমার ছেলের শীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা রক্ত জমাট জখম করে। এ সময় সিয়ামের বন্ধু তৌফিক তাকে রক্ষা করিতে গেলে ৪নং বিবাদীর হাতে থাকা চাকু দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে তৌফিক এর পিঠের ডান পাশে পার মারিয়া গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। অন্যন্য বিবাদীরা তৌফিককে এলোপাথারী পিটাইয়া তাহার দুই হাতে সহ শীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা রক্ত জমাট জখম করে। সংবাদ পেয়ে সিয়ামের বাবা ও তৌফিকের মা দ্রæত ঘটনাস্থলে গেলে বিবাদীরা তাদেরকেও এলোপাথারী মারপিট করিয়া নীলাফুলা জখম করে এবং নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার ছিনিয়ে নেয়।
এ দিকে স্কুল শিক্ষার্থী সিয়ামকে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখমের ঘটনায় মামলা না হওয়ায় থানা পুলিশের কর্মকান্ডে ক্ষুদ্ধ স্থানীয়রা। তারা বলেন, গুরুতর অপরাধের ঘটনায় পুলিশ কর্তৃক মামলা বা কোন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়ায় আরো বেপরোয়া মনোভাবে রুপ ধারন করেছে রাজন-মোহনগং। ফতুল্লা শাহজাহান রোলিং মিল এলাকার সহোদর দুইভাই রাজন-মোহনের জুয়া এবং মাদকে সর্বশান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। উঠতি বয়সি কিশোর-যুবকরা এই আসরে গিয়ে ধংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। রাজন-মোহনের জুয়া-মাদকের আসর বন্ধ না হওয়ায় অভিভাবক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজন-মোহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তুলেছে। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপারের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করে ভুক্তভোগী মহল ।
স্থানীয়রা আরো জানায়, শাহজাহান রোলিং মিল সংলগ্ন বাইতুন নাজাত জামে মসজিদের পাশে একটি বাড়ীতে দীর্ঘদিন নির্বিঘ্নে চালছে জমজমাট জুয়া-মাদকের আসর। রাজন-মোহন দুইভাই জুয়া-মাদকের আসর পরিচালনা করে আসছে। দীর্ঘ দুই দশক ধরে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে জুয়া-মাদকের হাট বসিয়েছে তারা। রাজন-মোহনের এই অপকর্ম বন্ধ করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে র্যাব, পুলিশের যৌথ অভিযান দাবি করেছে এলাকার সচেতন মহল।
এলাকাবাসী আরো জানায়, মোহন ও রাজন দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করছে। শুধু জুয়াই নয়, পাশাপাশি মাদকের আড্ডা বসানোরও অভিযোগ উঠেছে।
এসব আসরে প্রতি রাতে উড়ছে লাখ লাখ টাকা। শাজাহান রোলিং মিলস বাইতুন নাজাত মসজিদের পাশেই এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী সন্ত্রাসীরা এসব জুয়ার আসরের নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছেন।
এদিকে মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লীদের যাওয়া-আসার ও ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে জুয়ায় আশা লোকজনে জন্য। এলাকার লোকজন জুয়ার আসর বন্ধের জন্য মোহন-রাজনকে একাধিকবার নিষেধ ও বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তারা বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি প্রদান করছে।
এ বিষয়ে রাজনের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ঝগড়ার বিষয়টি উভয়পক্ষের মাধ্যমে মিমাংশা হয়ে গেছে। তাছাড়া মাইনুদ্দিনের ছেলে এলাকায় চুরি,ছিনতাই করে বেড়ায়। তাই স্থানীয়রা এবং পুলিশ মিলে মিমাংশা করে দিছে। জুয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি আগে জুয়ার বোর্ড চালাতাম। কিন্তু আমার আব্বার মৃত্যুর পর থেতে সেটা বন্ধ করে দিয়েছি। এখন তো ষ্টেশন এলাকায় মামুন জুয়ার বোর্ড চালাচ্ছে কই কেউ তো কিছু বলছেনা। আমি রাজনীতি করি আমার নেতা বলেছে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে তাই বিরত রয়েছি। জুয়া নিয়ে আমাকে নিয়ে ১০ বছর আগ থেকে লেখালেখি করতাছে। আমি যদি জুয়ার বোর্ড চালাই তাহলে পুলিশ কেন আমাকে গ্রেফতার করেনা সেটা পুলিশকে জিজ্ঞেস করেন।
এ থানায় অভিযোগকারী আহত সিয়ামের পিতা মাইনুদ্দিনের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,না এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোন প্রকার আপোষ-মিমাংশা হয়নি। রাজন যা বলেছে তা মিথ্যা কথা।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমিতো আসামীকে চিনিনা। আপনারা আমাকে সহযোগিতা করুন আমি অবশ্যই অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো এবং ভুক্তভোগীকে আমার সাথে যোগাযোগ করতে বলবেন। #