শিরোনাম
বাবুর্চি ও অটো রিকশা চালানোর আড়ালে চালাতো ডাকাতি


নারায়ণগঞ্জের খবর প্রতিবেদকঃ বাবুর্চি ও অটো রিকশা চালানোর আড়ালে চালাতো ডাকাতির পরিকল্পনা। নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের বিভিন্ন শিল্প কারখানায় একই কায়দায় ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত দুর্ধর্ষ ডাকাত সদস্য মোঃ শফিক (২৬) নামের এক ডাকাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব- ১১, সদর কোম্পানী, নারায়ণগঞ্জ।

গ্রেফতারকৃত শফিক সিদ্ধিরগঞ্জ নিমাই কাসারী এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে। গত ১৩ এপ্রিল গোপন সংবাদে
কাঁচপুর এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব- ১১ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গত ২৬ মার্চ বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ সাহেব পাড়া এলাকায় এভেস্টা এ্যালুমিনিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ নামে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে ৫০/৬০ জন অজ্ঞাত নামা দুস্কৃতিকারী প্রবেশ করে কর্তব্যরত নিরাপত্তা কর্মীদের মারধর করে একটি কক্ষে আটক করে আনুমানিক
৩,৩৪,৩১,৯৫০/- (তিন কোটি চৌত্রিশ লক্ষ একত্রিশ হাজার নয়শত পঞ্চাশ) টাকার মালামাল লুষ্ঠন করিয়া ট্রাক যোগে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করে, যার, মামলা নং ৪৯ তারিখ ৩০/০৩/২০২৫। এর ধারা- ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড ১৮৬০। অভিযুক্ত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব- ১১ গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও এজাহার পর্যালোচনা করে জানা যায় যে, নারায়ণগঞ্ছ জেলার সিদ্ধিরগঞ্ছ থানাধীন সাহেব পাড়াস্থ এভেস্টা এ্যালুমিনিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ
নামক প্রতিষ্ঠানে গত ইং ২৬/০৩/২০২৫ তারিখ ০৮/১০ জন আনসার সদস্য বাদীর প্রতিষ্ঠানে ডিউটি করাকালে বিকাল অনুমান ১৭৩০ ঘটিকার সময় ০২ জন আনসার সদস্য বাহির হইতে ইফতার ক্রয় করিয়া প্রতিষ্ঠানের উত্তর পাশের মূল ফটক দিয়া প্রবেশকালে অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জন দুস্কৃতিকারীরা অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া অতর্কিতভাবে বাদীর প্রতিষ্ঠানের উত্তর পার্শ্বের মূল ফটক দিয়া ভিতরে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে দুষ্কৃতিকারীরা দায়িত্বরত আনসারদের মারধর করিয়া আটক করতঃ আনসার সদস্যদের অস্ত্র-গুলি ও মোবাইল ফোন দুষ্কৃতিকারীরা তাহাদের দখলে নিয়া নেয়। দুস্কৃতিকারীরা আনসার সদস্যদের হাত-পা বাধিয়া প্রতিষ্ঠানের ২য় তলার একটি অফিস রুমের ভিতরে আটকাইয়া রাখিয়া বাহির হইতে দরজা লাগাইয়া দেয়। এক পর্যায়ে দুস্কৃতিকারীরা বাদীর প্রতিষ্ঠানের মেইন লাইন হইতে বিভিন্ন মেশিনের সহিত সংযুক্ত পাওয়ার ক্যাবল, যাহা তামার তারের উপরে কালো ইনসুলিশন দ্বারা মোড়ানো ঘণণ ক্যাবল সহ সর্বমোট আনুমানিক ৩,৩৪,৩১,৯৫০/- (তিন কোটি চৌত্রিশ লক্ষ একত্রিশ হাজার নয়শত পঞ্চাশ) টাকার মালামাল লুষ্ঠন করিয়া ইং ২৭/০৩/২০২৫ তারিখ রাত্রি অনুমান ০৩০০ ঘটিকার সময় দুস্কৃতিকারীরা একটি অজ্ঞাত ট্রাক যোগে প্রতিষ্ঠানের উত্তর পার্শ্বের মূল ফটক দিয়ে বাহির হয়ে অজ্ঞাতস্থানে চলিয়া যায়। দস্কৃতিকারীরা যাওয়ার পর আনসার সদস্যরা পারস্পরিক সহায়তায় তাহাদের বাঁধন খুলিয়া অফিস কক্ষের জানালা দ্বারা বাহির হইয়া গ্রিলের মাধ্যমে নিচে নামিয়া প্রতিষ্ঠানের উত্তর পার্শ্বের মূল ফটক খোলা দেখিতে পায় এবং ফ্লোরে ট্রাকের চাকার দাগ দেখিতে পায়। আনসার সদস্যদের অস্ত্র-গুলি ও মোবাইল ফোন প্রতিষ্ঠানের ভবনের সিঁড়ির সামনে পাকা ফ্লোরে পাওয়া যায়। এমতাবস্থায় আনসার সদস্যরা বাদীকে ও প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানাইলে বাদী ঘটনাস্থলে যায় এবং ঘটনার
বিস্তারিত শুনিয়া প্রতিষ্ঠানের লুন্ঠিত হওয়া মালামালের হিসাব-নিকাশান্তে বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সহিত আলাপ-আলোচনা শেষে থানায় আসিয়া
এজাহার দায়ের করিলে নিয়মিত মামলা রুজু হয়। চাঞ্চল্যকর এই ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব-১১ ছায়া তদন্ত শুরু করে।
পরে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এবং তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে দুর্ধর্ষ ডাকাত মোঃ শফিক (২৬), পিতা- আব্দুল খালেক, সাং- নিমাই কাসারী, থানাসিদ্ধিরগঞ্জ, জেলা- নারায়ণগঞ্জ’কে র্যাব-১১, সদর কোম্পানী, নারায়ণগঞ্জ এর অভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন হতে ইং ১৩/০৪/২০২৫ তারিখ ২০:০০ ঘটিকায় গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এই ডাকাতির ঘটনারসহ নারায়ণগঞ্জ ও দেশের বিভিন্ন জেলায় ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। উল্লেখ্য যে, দুর্ধর্ষ ডাকাত মোঃ শফিক (২৬) এর পিসিপিআর যাচাই করে তার বিরুদ্ধে নিম্নোক্ত মামলাগুলো রয়েছে;

১। নারায়ণগঞ্জ এর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এফআইআর নং-৭, তারিখ- ০৩ ডিসেম্বর, ২০১১; সময়- ধারা-৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০; এজাহারে অভিযুক্ত।
২। নারায়ণগঞ্জ এর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এফআইআর নং-২৯, তারিখ- ২২ সেপ্টেম্বর, ২০০৯; সময়- ১১.৩৫ ধারা- ১৯(১) এর ৭(ক) ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন; এজাহারে অভিযুক্ত।
৩। নারায়ণগঞ্জ এর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এফআইআর নং-২৯, তারিখ- ২২ সেপ্টেম্বর, ২০০৮; সময়- ধারা- ১৯(১) এর ৭(ক) ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন; এজাহারে অভিযুক্ত।
৪। নারায়ণগঞ্জ এর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এফআইআর নং-১৪, তারিখ- ০৫ এপ্রিল, ২০১৮; সময়- ২২.৪৫ ধারা-১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৮০/৪২৭/৫ পেনাল কোড-১৮৬০; এজাহারে অভিযুক্ত।
৫। নারায়ণগঞ্জ এর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এফআইআর নং-৬, তারিখ- ০৫ জানুয়ারি, ২০১৭; সময়- ০০.৩০ ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০; এজাহারে অভিযুক্ত।
৬। নারায়ণগঞ্জ এর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার জিডি নং-৩৯৯, তারিখ- ০৭ জুন, ২০২৩; সময়-১৩:২০ ধারা- মামলায় তদন্তে সন্দিগ্ধ।
৭। নারায়ণগঞ্জ এর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এফআইআর নং-২৩, তারিখ- ১২ সেপ্টেম্বর, ২০০৬; সময়- ধারা-১৯(১)এর১(ক) ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন; এজাহারে অভিযুক্ত।
৮। নারায়ণগঞ্জ এর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এফআইআর নং-৩৬, তারিখ- ২০ অক্টোবর, ২০২৩; জি আর নং-৫১৭, তারিখ-২০ অক্টোবর, ২০২৩; সময়- ০০.১০ ঘটিকা ধারা-৪(১)/৫ আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন, ২০১৯;, এজাহারে অভিযুক্ত – চার্জশীট :-৪৮৪, এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
৯। নারায়ণগঞ্জ এর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এফআইআর নং-২৫, তারিখ- ২২ অক্টোবর, ২০২৪; জি আর নং-৪২৮, তারিখ-২২ অক্টোবর, ২০২৪; সময়- ২২.১০ ঘটিকা ধারা-১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩০৭/৩২৬/১০৯ ঞযব চবহধষ ঈড়ফব, ১৮৬০; তৎসহ ৩/৬ ঞযব ঊীঢ়ষড়ংরাব ঝঁনংঃধহপবং অপঃ, ১৯০৮; এজাহারে অভিযুক্ত।
১০। নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মামলা নং-৪৯ তারিখ-৩০/০৩/২০২৫ খ্রিঃ, ধারা ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড ১৮৬০; এই মামলায় সে তদন্তে সন্ধিগ্ধ আসামী।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। #
