শিরোনাম
হটাৎ প্রেসার কমে বা বেড়ে গেলে করনীয় কি | এ ক্ষেত্রে যা খাবেন
নারায়ণগঞ্জের খবর ডেস্কঃ হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ র’ক্তচা’পের স’মস্যায় ভো’গেন অনেকেই। সঠিক খাদ্যগ্রহণের মাধ্যমে এর থেকে দূ’রে থাকা সম্ভব। উচ্চ র’ক্তচা’প কমানোর জন্য এমন সব খাবারের প’রিকল্পনা ক’রতে হবে, যাতে থাকবে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম।
কারণ খাদ্যের এসব উপাদান উচ্চ র’ক্তচা’প কমাতে সহায়ক। কম চর্বিযু’ক্ত দুধ বা চর্বিবিহীন দুধ বা দুধজাত খাদ্য যেমন দই ইত্যাদিতে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম।তা’জা ফল যেমন আপেল, কলা আর শাকসবজি হচ্ছে পটাশিয়ামের ভালো উৎস। টমেটোতেও আছে বেশ পটাশিয়াম।বেশি ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায় দানা শস্য বা গোটা শস্য, বিচি জাতীয় খাবার, বাদাম, শিমের বিচি, ডাল, ছোলা, লাল চালের ভাত, লাল আটা, আলু, সবুজ শাকসবজি, টমেটো, তরমুজ, দুধ ও দই ইত্যাদিতে।
১. কম চর্বিযু’ক্ত দুধ বা চর্বিবিহীন দুধ বা দুধজাত খাবার প্রতিদিন খেতে হবে ২ থেকে ৩ সার্ভিং। এক সার্ভিং দুধ বা দুধজাত খাবার মানে আধা পাউন্ড বা এক গ্লাস দুধ অথবা এক কাপ দই।
৩. ফল ৪ থেকে ৫ সার্ভিং প্রতিদিন। টুকরো টুকরো করে কা’টা আধা কাপ ফল কিংবা মাঝারি সাইজে’র একটা আপেল বা অর্ধেকটা কলা অথবা আধা কাপ ফলের রস এতে হবে ফলের এক সার্ভিং। ফলের রসের চেয়ে আস্ত ফলই ভালো।
৪. শাকসবজি প্রতিদিন প্রয়োজন ৪ থেকে ৫ সার্ভিং। শাকসবজির এক সার্ভিং মানে এক কাপ কাঁচা শাক বা আধা কাপ রান্না করা শাক।৫. দানা শস্য প্রতিদিন দরকার ৭ থেকে ৮ সার্ভিং। দানা শস্যের এক সার্ভিংয়ের উদাহ’রণ হলো এক স্লাইস রুটি অথবা আধাকাপ ভাত বা এক কাপ পরিমাণ গোটা দানা শস্য।
৬. বিচি জাতীয় খাবার প্রতি সপ্তাহে প্রয়োজন ৪ থেকে ৫ সার্ভিং। বিচি জাতীয় খাবারের এক সার্ভিংয়ের উদাহ’রণ হলো এক কাপের তিন ভাগের এক ভাগ বাদাম বা আধাকাপ রান্না করা শিম বা মটরশুঁটি।
হ’ঠাৎ প্রেসার কমে গেলে কী’ করবেন?
ব্লাড প্রেসার বা র’ক্তচা’প মানবদে’হে র’ক্ত সঞ্চালনে চালিকা শ’ক্তি হিসেবে কাজ করে। মানবদে’হে র’ক্তচা’পের একটি স্বা’ভাবিক মাত্রা আছে। তার ওপর ভিত্তি করেই উচ্চ র’ক্তচা’প বা হাই ব্লাড প্রেসার ও নিম্ন র’ক্তচা’প বা লো ব্লাড প্রেসার পরিমাপ করা হয়। উচ্চ র’ক্তচা’পের মতোই নিম্ন র’ক্তচা’পও কিন্তু শ’রীরের জন্য ক্ষ’তিকর। লো ব্লাড প্রেসারের আরেক নাম হাইপোটেনশন।চিকি’ৎসকের মতে, একজন সু’স্থ স্বা’ভাবিক মানুষের র’ক্তচা’প থাকে ১২০/৮০। অন্যদিকে র’ক্তচা’প যদি ৯০/৬০ বা এর আশপাশে থাকে তাহলে লো ব্লাড প্রেসার হিসেবে ধ’রা হয়। প্রেসার যদি অ’তিরি’ক্ত নেমে যায় তাহলে মস্তিষ্ক, কিডনি ও হৃদপিণ্ডে সঠিকভাবে র’ক্ত প্রবাহিত হতে পারে না তখন এ রো’গ দেখা দেয়। আবার অ’তিরি’ক্ত পরিশ্রম, দু’শ্চিন্তা ও স্নায়ুর দু’র্বলতা থেকে লো ব্লাড প্রেসার হতে পারে।
লক্ষণ:
সাধারণত প্রেসার লো হলে মা’থা ঘোরানো, ক্লান্তি, অ’জ্ঞান হয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব, বুক ধড়ফড় করা, অবসাদ, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা ও স্বা’ভাবিক শ্বা’স-প্রশ্বা’স নিতেও ক’ষ্ট হয়। অ’তিরি’ক্ত ঘাম, ডায়রিয়া বা অ’ত্যধিক বমি হওয়া, দে’হের ভেতরে কোনো কারণে র’ক্তক্ষরণ হলে যেমন: র’ক্তবমি, পায়খানার স’ঙ্গে অ’তিরি’ক্ত র’ক্তক্ষরণ হলে, শা’রীরিকভাবে আ’ঘা’তপ্রাপ্ত বা দুর্ঘ’টনার ফলে র’ক্তপাত ঘটলে এবং অ’পুষ্টিজনিত কারণেও লো ব্লাড প্রেসার দেখা দিতে পারে।আবার গর্ভবতী মায়েদের গর্ভের প্রথম ৬ মাস হরমোনের প্র’ভাবে লো প্রেসার হতে পারে। এ সময় মা’থা ঘোরানো বা মা’থা হালকা অনুভূত হওয়া, মা’থা ঘুরে অ’জ্ঞান হয়ে যাওয়া, বসা বা শোয়া থেকে হ’ঠাৎ উঠে দাঁড়ালে মা’থা ঘোরা বা ভা’রসাম্যহীনতা, চোখে অন্ধকার দেখা, ঘন ঘন শ্বা’স-প্রশ্বা’স নেওয়া, হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া, খুব বেশি তৃষ্ণা অনুভূত হওয়া, অস্বা’ভাবিক দ্রুত হৃদকম্পন, নাড়ি বা পালসের গড়ি বেড়ে যায়।
প্রাথমিক চিকিৎ’সা:
লো ব্লাড প্রেসার বা নিম্ন র’ক্তচা’প নিয়ে অনেকেই চিন্তায় থাকেন। তবে বিষয়টি নিয়ে অ’তিরি’ক্ত চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ এটা উচ্চ র’ক্তচা’পের চেয়ে কম ক্ষ’তিকর ও স্বল্পমেয়াদী স’মস্যা। আর প্রেসার লো হলে বাড়িতেই প্রাথমিক কিছু পদক্ষে’প নেওয়া যায়।এক্ষেত্রে হ’ঠাৎ প্রেসার কমে গেলে যা করবেন-লবণ-পানি লবণ র’ক্তচা’প বাড়ায়। কারণ এতে সোডিয়াম আছে। তবে পানিতে বেশি লবণ না দেওয়াই ভালো। সবচেয়ে ভালো হয়, এক গ্লাস পানিতে দুই চা-চামচ চিনি ও এক-দুই চা-চামচ লবণ মিশিয়ে খেলে। তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের চিনি বর্জন করাই ভালো।
কফি-হট চকলেট
হ’ঠাৎ করে লো প্রেসার দেখা দিলে এক কাপ কফি খেতে পারেন। স্ট্রং কফি, হট চকোলেট, কমল পানীয়সহ যে কোনো ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় দ্রুত ব্লাড প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে। আর যারা অনেক দিন ধ’রে এ স’মস্যায় ভু’গছেন , তারা সকালে ভা’রী নাশতার পর এক কাপ কফি খেতে পারেন।
বিটের রস
বিটের রস হাই ও লো প্রেসার দুটোর জন্য সমান উপকারী। এটি র’ক্তচা’প স্বা’ভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এভাবে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাবেন।
বাদাম
লো-প্রেসার হলে পাঁচটি কাঠবাদাম ও ১৫ থেকে ২০টি চিনাবাদাম খেতে পারেন। এটা পেসার বাড়াতে সহায়তা করে।
পুদিনা
ভিটামিন ‘সি’, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও প্যান্টোথেনিক উপাদান যা দ্রুত ব্লাড প্রেসার বাড়ানোর স’ঙ্গে স’ঙ্গে মা’নসিক অবসাদও দূ’র করে পুদিনা পাতা। এর পাতা বেটে নিয়ে এর স’ঙ্গে মধু মিশিয়ে পান ক’রতে পারেন।
যষ্টিমধু
আদিকাল থেকেই যষ্টিমধু বিভিন্ন রো’গের মহৌষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আ’সছে। এক কাপ পানিতে এক টেবিল চামচ যষ্টিমধু দিয়ে রেখে দিন। ২-৩ ঘণ্টা পর পান করুন। এছাড়া দুধে মধু দিয়ে খেলেও উপকার পাবেন।
স্যালাইন
শ’রীরে পানিশূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইট ভা’রসাম্যহীনতার কারণে নিম্ন র’ক্তচা’প হলে শুধু খাবার স্যালাইন মুখে খেলেই প্রেসার বেড়ে যায়। লো ব্লাড প্রাসারে খাবার স্যালাইন সবচেয়ে উপযোগী এবং তাৎক্ষণিক ফলদায়ক।তবে যেসব ওষুধে র’ক্তচা’প কমে বা লো প্রেসার হতে পারে, সেসব ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সা’বধানতা অবলম্বন করুন। যাদের দীর্ঘমেয়াদি নিম্ন র’ক্তচা’পে ভু’গছেন তারা অবশ্যই চিকি’ৎসকের প’রাম’র্শ নিন। চিকি’ৎসকরা নিম্ন র’ক্তচা’পের কারণ শনা’ক্ত করে তারপর ব্যব’স্থাপত্র দিয়ে থাকেন। লো ব্লাড প্রাসারে খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি কার্বোহাইড্রেট এবং গ্লুকোজ খেলেও কিন্তু ভালো উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া লো প্রেসার নি’য়ন্ত্রণে রাখতে সময় মতো পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত। #